নিশীথ প্রামাণিক এবং অশোক মণ্ডলের বুথে হার। —নিজস্ব চিত্র।
৫৭ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে মাস ছয়েক আগে খাতায় কলমে দিনহাটা ছিল বিজেপি-র দখলে। কিন্তু মঙ্গলবার উপনির্বাচনের ফলে ফুল উল্টে গিয়েছে। পদ্ম থেকে দিনহাটা এখন জোড়াফুলের। দিনহাটা কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচনে জেতা নিশীথ প্রামাণিক যে বুথের ভোটার সেখানেও হার হয়েছে বিজেপি-র। এমনকি ওই কেন্দ্রে এ বারের বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের বুথেও জোরালো ধাক্কা খেয়েছে পদ্মশিবির।
দিনহাটার ভেটাগুড়ি চৌহদ্দি নিশীথের বুথ। গত ৩০ নভেম্বর ওই এলাকার মানুষ ভোট দিয়েছিলেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী বিদ্যালয়ে। ওই বুথে বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৯৫টি ভোট। অথচ নিশীথের বুথেই তৃণমূল পেয়েছে তার প্রায় চার গুণ অর্থাৎ ৪৬১টি ভোট। একই পরিস্থিতি দিনহাটার বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের বুথেও। ওই বুথে বিজেপি পেয়েছে ১৫৬ ভোট। অথচ তৃণমূল পেয়েছে ৪৬০ ভোট। শুধু তাই নয় নিশীথ এবং অশোকের বুথের মতো ফল বহু এলাকাতেই। যার ফলে ছ’মাস আগে ৫৭ ভোটে হেরে যাওয়া তৃণমূল প্রার্থী উদয় গুহের এ বার এক লক্ষ ৬৪ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়।
এমন বিপুল জয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত উদয়ন। নিশীথের নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে উনি কেন্দ্রীয় প্রতিবন্ধী মন্ত্রী। উনি কোচবিহারের স্বঘোষিত মহারাজ।’’ তিনি আরও বলছেন, ‘‘কমল গুহ অনেক কিছু পারেননি। আমি পেরেছি। এখানে যা ফল হল তা কেউ ভাঙতে পারবে বলে মনে হয় না।’’
দিনহাটায় তৃণমূলের এক লক্ষ ৬৪ হাজারের বেশি ব্যবধানে জয়কে ‘ছাপ্পা দেওয়ার’ ফল হিসাবেই দেখছে বিজেপি। পদ্মশিবিরের কোচবিহার জেলার সভাপতি মালতী রাভা রায়ের মতে, ‘‘এত সন্ত্রাস! মানুষকে বাড়ি থেকে বার হতে দেওয়া হয়নি। আমরা কমিশন এবং প্রশাসনকে বার বার বলেছি। এমন সন্ত্রাস কোচবিহারের কেউ কখনও দেখেননি। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ফলেই তা কি প্রমাণ হচ্ছে না? মানুষ এমন ভাবে কখনও ভোট দেয়?’’ নিশীথের বুথে বিজেপি হেরেছে, এ নিয়ে অবশ্য নাম না করেই মালতী বলছেন, ‘‘ওঁর দায়িত্বশীল তো অবশ্যই হওয়া উচিত ছিল।’’ দিনহাটার এই দিন বদলের দিনে অবশ্য কোথাও দেখা মেলেনি নিশীথের।