TMC Leader Murder

সিবিআইয়ের তদন্ত চান নেতার স্ত্রী

ঘটনার সময় ধাবায় উপস্থিত ছিলেন রামগঞ্জ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কোর কমিটির সদস্য মেহেবুব আলম।

Advertisement

অভিজিৎ পাল

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ১০:১৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ধাবায় তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নিহত বাপি রায়ের স্ত্রী তথা ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য লিপি রায় বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমের সামনে সিবিআই-তদন্তের দাবি তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা রামগঞ্জ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কোর কমিটির সদস্য মেহেবুব আলম জানিয়েছেন, তিন দুষ্কৃতীর সঙ্গে আরও বেশ কয়েক জন ঘটনাস্থলে হাজির ছিল। জেলা পুলিশ সুপার জবি টমাস সোমবার বলেন, ‘‘পুলিশি তদন্ত চলছে। দুষ্কৃতীদের যাতে দ্রুত গ্রেফতার করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

গত শনিবার রাতে ইসলামপুরের মাদারিপুর সংলগ্ন এলাকার ধাবায় তিন জন দুষ্কৃতী স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপি রায়কে গুলি করে পালিয়ে যায় এবং পালানোর সময় ছোড়া এলোপাথাড়ি গুলিতে আহত হন তৃণমূলের রামগঞ্জ-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রিজওয়ানা খাতুনের স্বামী সাজ্জাদ হুসেন। এ দিন নিহত বাপির স্ত্রী লিপি বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে আস্থা রয়েছে। কিন্তু অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, দুষ্কৃতীরা ধরা না পড়ায় সিবিআই-তদন্ত চাইছি।’’

ঘটনার সময় ধাবায় উপস্থিত ছিলেন রামগঞ্জ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কোর কমিটির সদস্য মেহেবুব আলম। তিনি জানান, সন্ধে ৭টা ১০ নাগাদ তিনি ধাবায় যান এবং বাপি রায় সেখানে আগে থেকেই ছিলেন। তিনি আরও জানান, রামগঞ্জ-২ পঞ্চায়েত বোর্ডের সদস্যদের প্রায় সকলেই ছিলেন সেখানে এবং চার ঠিকাদারও এসেছিলেন। মেহেবুব বলেন, ‘‘২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার খরচ, পরিচয়পত্রের জন্য তালিকা তৈরি করার মতো নানা বিষয়ে আলোচনা চলছিল। হঠাৎ বৃষ্টি আসায় ছাউনির নীচে চলে যাই। তিন জনকে এসে দাঁড়াতে দেখি। ভেবেছিলাম, বৃষ্টি থেকে বাঁচতে এসেছে। কিন্তু আচমকা গুলি চলতে শুরু করে। আমরা ভয়ে পালিয়ে যাই। গুলির আওয়াজ থামতে ফিরে এসে দেখি, বাপিদা রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে রয়েছে।’’ মেহেবুবের দাবি, ‘‘দুষ্কৃতীদের চেহারা দেখে মনে হয়েছে, ওরা বাইরের ভাড়া করা লোক।’’ তাঁর দাবি, শুধু তিন জনই নয়, ওদের সঙ্গে আশপাশে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন ছিল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পুলিশ এমন ভাবে জেরা করছে, যেন সেদিন ওখানে থেকেই ভুল করেছি!’’

Advertisement

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অসংখ্য গুলি উদ্ধার করেছে বলে দাবি। ঘটনার পরেই পুলিশ ধাবার ‘ক্লোজ়ড-সার্কিট ক্যামেরা’র সমস্ত রেকর্ডিং নিয়ে যায় এবং নিহতের মোবাইল ফোনের কল-রেকর্ডের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। সূত্রের দাবি, রাতের দিকে নানা কাজে শিলিগুড়ি বা বিধাননগরের দিকে যেতেন বাপি। প্রশ্ন উঠেছে, সে দিন ওই ধাবায় যে বাপি ছিলেন, তা দুষ্কৃতীরা জানল কী ভাবে!

রবিবার নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি, তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজ নিতে ইসলামপুর থানায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। সেখান থেকে বেরিয়ে পরে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশকে সময় দিতে হবে। পুলিশ ঠিক দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলবে।’’ তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এই খুনের পিছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ নেই। তবে আমরা পুলিশের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রাখছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement