প্রতীকী ছবি।
করোনার জেরে লকডাউন চলছে সারা দেশে। সব ক্ষেত্রেই উৎপাদন থমকে যাওয়ায়, ব্যবসায়িক কাজে ক্ষতি হওয়ায় প্রবল ধাক্কা খেয়েছে দেশের অর্থনীতি। এর থেকে বাদ যায়নি পর্যটন শিল্পও। এই সময়েও যা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশের পর্যটন শিল্পের জন্য তৈরি করেছে ‘ন্যাশনাল ট্যুরিজ়ম টাস্ক ফোর্স’। তাতে প্রতিটি রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী, আধিকারিক, বিভিন্ন বণিক সভা, সংগঠনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। কেন্দ্রীয় পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ শুরু করবে টাস্ক ফোর্স। প্রতিটি রাজ্যের থেকে মতামত নিয়ে তৈরি হবে অ্যাকশন প্ল্যান। আগামীদিনে করোনা মোকাবিলার পরে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে যখন সরকার কাজ শুরু করবে, তখন টাস্ক ফোর্সের মতামত নিয়ে এগোবে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক।
গতকাল নির্দেশিকা জারির পরেই বিষয়টি শুনেছেন এ রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। মঙ্গলবার তিনি জানান, বিষয়টি শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র রাজ্যের সহযোগী হওয়ার বদলে পরীক্ষক হয়ে উঠেছে। ওরা মুখে বলে এক করে আর এক।’’ দেশব্যাপী পর্যটন শিল্পের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা প্রয়োজন বলেও মনে করেন পর্যটনমন্ত্রী।
ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফেও টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। এর মাথায় আছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন দফতর এবং ক্ষেত্র ধরে ধরে ভবিষ্যতে কী করণীয় তা ঠিক করতে চাইছে রাজ্য। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পমহল, বণিক সভা-সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে পর্যটনের জন্য টাস্ক ফোর্স গড়ার দাবি জানান পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতেরা। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য তাঁদের রাজ্যের তৈরি বিশেষ টাস্ক ফোর্সের কাছেই মতামত জমা করার জন্য বলেছেন। এই প্রস্তুতির মাঝেই এ বার কেন্দ্রীয় সরকার পর্যটনের জন্য আলাদা টাস্ক ফোর্স গড়ল।
সরকারি সূত্রের খবর, ২০২০-২১ সালের আর্থিক বছরে পর্যটন মন্ত্রকের জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ রয়েছে ২৫০০ কোটি টাকা। দেশের জিডিপি এবং কর্মসংস্থানে পর্যটনের অংশীদারিত্ব ৯.২ শতাংশ। পর্যটন মন্ত্রকের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, দেশের মধ্যে করোনার জন্য সবথেকে প্রথম আঘাত পেয়েছে পর্যটন শিল্প। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলেও ডিসেম্বরের আগে পর্যটন শিল্প কতটা ঘুরে দাঁড়াবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এমনিতেই নোটবন্দি, আর্থিক মন্দা সব মিলিয়ে পর্যটন শিল্প ৩০-৪০ শতাংশ ক্ষতির মুখে পড়েছিল।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানান, শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গেই গরমের এই মরসুমে মোটামুটি ৫০ কোটি টাকা প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে। এর থেকে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে, তার রূপরেখা তৈরি করা এখন জরুরি। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্যকে যৌথভাবে কাজ করে ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা দেখাতে হবে।’’