Coronavirus

রক্ত দিয়ে রুকসানার প্রাণ বাঁচালেন অলোক

মাসুদদের বাড়ি কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জে। বাবা আনারুল হক রাজস্থানে গিয়েছেন কাজের জন্য। দিনহাটার বাড়িতে তিন ভাইবোন আর অসুস্থ মাকে নিয়ে থাকেন মাসুদ।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০৮:০৮
Share:

হাসপাতালে অলোক। নিজস্ব চিত্র

জরুরি অস্ত্রোপচার হয়েছে। ঠিক করতে হয়েছে পাঁজরের হাড়ে সংক্রমণ। সে জন্য প্রয়োজন রক্তেরও। কিন্তু কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে এ পজ়িটিভ গ্রুপের রক্ত কার্যত নেই তখন। তা হলে কী হবে? নিরুপায় হয়ে রুকসানা বিবির ছেলে মাসুদ ইসলাম খোঁজ নিতে শুরু করেন, কাছেপিঠে কারও এই গ্রুপের রক্ত আছে কিনা। প্রচার শুরু করলেন সোশ্যাল মিডিয়াতেও। শেষে খোঁজ মিলল অলোক নাগের। এবিএন শীল কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়া। তাঁকে ফোন করে কেঁদে পড়লেন মাসুদ, ‘‘আমার মায়ের রক্তের প্রয়োজন। না হলে তাঁকে বাঁচানো কঠিন।’’ লাজুক হেসে অলোক বলেন, ‘‘ধর্ম, জাতপাত বুঝি না, আমি মানুষের পাশে থাকতে চাই।’’ আর মাসুদ বলছেন, ‘‘ওই তরুণই আমার কাছে ঈশ্বর!’’

Advertisement

মাসুদদের বাড়ি কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জে। বাবা আনারুল হক রাজস্থানে গিয়েছেন কাজের জন্য। দিনহাটার বাড়িতে তিন ভাইবোন আর অসুস্থ মাকে নিয়ে থাকেন মাসুদ। এর মধ্যে লকডাউন। কাজ নেই আনারুলের। দিনহাটার বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন রুকসানা বিবি।

মাসুদ জানান, বছর তিনেক আগে পাঁজরে চোট পান রুকসানা। দিন আষ্টেক আগে ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কোচবিহার মেডিক্যালে ভর্তি করানো হলে ডাক্তাররা জানান, অস্ত্রপচার করবে হবে। বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। তখন দুই ইউনিট রক্ত লাগে।

Advertisement

রবিবার ফের দুই ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। লকডাউন চলছে, পরিজনরা থাকেন দূরে। তার উপরে রোজার শুরু হয়েছে, কাউকেই হাসপাতালে আনতে পারেননি মাসুদ।

বন্ধু আকাশ দে-র কাছ থেকে ঘটনার কথা জানতে পারেন অলোক। পরে ফোনে কথা হয় মাসুদের সঙ্গেও। তাঁর রক্তে রুকসানা কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠায় খুশি অলোক। ঘনঘন খোঁজ নিচ্ছেন, ‘‘মাসিমা ভাল আছেন তো?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement