রক্ত দেওয়ার পর হামিদুল। নিজস্ব চিত্র
কিডনির সমস্যায় ভুগছেন মা। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ‘বি পজিটিভ’ রক্ত। লকডাউনের জেরে রক্ত ‘বাড়ন্ত’ মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ব্লাডব্যাঙ্কে। অসুস্থ মায়ের জন্য রক্ত জোগাড় করতে না পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে কথা ছড়াতেই রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন পুরাতন মালদহের হামিদুল ইসলাম। রোজার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে ১৫ কিমি দূর থেকে বৃষ্টি মাথায় বাইকে মালদহ ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দিলেন তিনি।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের স্টেশনপাড়ার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব কৃষ্ণা দাশগুপ্ত দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। সপ্তাহে দু’বার ডায়ালাইসিস করাতে হয়। শহরের এক নার্সিংহোমে চিকিৎসা চলছে কৃষ্ণার। সূত্রের খবর, তাঁর চিকিৎসার জন্য এ দিন দুই ইউনিট ‘বি পজিটিভ’ রক্ত প্রয়োজন ছিল। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে যান তাঁর স্কুলশিক্ষক ছেলে সুদীপ্ত। রক্ত ‘বাড়ন্ত’ ছিল সেখানে। ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহে দিনে কমপক্ষে ৭০ ইউনিট করে রক্তের প্রয়োজন হয়। জেলায় প্রায় ৬০০ থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছেন। তাঁদের জন্য প্রতি মাসে ৩০০ ইউনিট রক্ত মজুত রাখতে হয়। লকডাউনে কোনও শিবির না হওয়ায় রক্তের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি জানতে পারেন পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা পঞ্চায়েতের বলাতলির হামিদুল। তিনি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। রোজা করেছিলেন তিনি। হামিদুল বলেন, “পবিত্র রমজানে সাহায্য করতে পেরে খুব ভাল লাগছে। এখন রক্তের সঙ্কট চলছে। এমন অবস্থায় আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।”
স্বস্তিতে সুদীপ্তও। তিনি বলেন, ‘‘হামিদুল যেন দেবদূত।’’ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার অমিতকুমার দাঁ বলেন, “ওঁর মানবিকতাকে কুর্নিস জানাচ্ছি।’’