দুর্বিপাক: এই মহিলাদের সকলেরই স্বামী ভিন্ রাজ্যে। (ডান দিকে) চার ছেলেকে নিয়ে সাগরী বিবি। নিজস্ব চিত্র
গত সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। সঙ্গে আবেদন করেছিলেন চার ছেলের কার্ডের জন্যেও। অভিযোগ, ছ’মাস পেরলেও কার্ড পাননি। এক বছর ধরে স্বামী দুবাইয়ে কাজ করেন। সেখান থেকে প্রতি মাসে টাকা পাঠালে তবেই ছোট ছোট চার ছেলেকে নিয়ে সংসার চালান তিনি। কিন্তু করোনা মোকাবিলায় দুবাইয়েও লকডাউন চলছে। স্বামী কর্মহীন। এ মাসে টাকা পাঠাতে পারেননি। রাজ্য সরকারের তরফে ডিজিটাল রেশন কার্ডধারীদের ছ’মাসের জন্য বিনামূল্যে চাল ও আটা বিলি করা হলেও, তা না থাকায় সেই রেশন পাননি তিনি। চার ছেলেকে নিয়ে কার্যত অর্ধাহারে দিন কাটছে নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতঘড়িয়া বাবুপুর গ্রামের সাগরী বিবি।
শুধু সাগরী নন, বাবুপুরের প্রায় ৫০টি পরিবারের কর্তারা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন। লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাঁরা কেউ এ মাসে সংসার চালানোর খরচের জন্য টাকা পাঠাতে পারেননি। অভিযোগ, সে সব পরিবারের লোকেরাও মাসছয়েক আগে ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউই তা পাননি। ফলে তাঁরাও সরকারের দেওয়া বিনামূল্যে রেশন তুলতে পারছেন না।
সাগরী বিবির অভিযোগ, ‘‘রেশন ডিলার, পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে খাদ্য দফতরে অনেক যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কিছুই হয়নি। ওই কার্ড থাকলে সরকারি রেশন পেতাম। ঘরে যা ছিল সব শেষ। এখন কী করে যে চলবে তা বুঝে উঠতে পারছি না।’’ একই অভিযোগ শেরিনা বিবির। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনের পর থেকে মুম্বইয়ে থাকা স্বামী কর্মহীন। আমাদের জন্য টাকা পাঠাবে কী করে? কী খেয়ে যে বেঁচে থাকব জানি না।’’
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা লায়লা আখতার বানু বলেন, ‘‘আমার সংসদে প্রায় ৬০০ পরিবার আবেদন করেও ডিজিটাল রেশন কার্ড এখনও পাননি। ফলে তাঁরা রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন না। বাড়ির মহিলারা ছেলেপুলেদের নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।’’ ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই পরিবারগুলির কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া এখনও চলছে।’’