যাত্রাপথে: ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। মঙ্গলবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে তোলা ছবি। ছবি: স্বরূপ সরকার।
হয় ৪৮ ঘণ্টা আগে করা আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট, নয়তো টিকার দু’টি ডোজ়। ভিন্ রাজ্যের পর্যটকদের জন্য এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হল পাহাড় ও ডুয়ার্সে। মঙ্গলবার দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বৈঠক করেন পর্যটন সংগঠন, বণিকসভা সিআইআই, হোটেল মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে। ছিলেন আর বিভিন্ন স্তরের মানুষ। সেখানেই জানিয়ে দেওয়া হয় এই নিয়ম দু’টি। পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমরা হোটেল, হোম-স্টেগুলিকে বাইরের রাজ্যের পর্যটক বা বাসিন্দাদের জন্য নিয়ম কড়াভাবে চালু করতে বলেছি। স্বাস্থ্যবিধিও মানতে হবে। এ রাজ্যের লোক আপাতত এর আওতায় নেই।’’
সম্প্রতি পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে ভিড় নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে আইএমএ। মঙ্গলবার এই নিয়ে উদ্বেগ জানান প্রধানমন্ত্রীও। বিকেলে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে ডাকা বৈঠকে সেই আশঙ্কার কথাই আর একবার শোনা গেল। বিশেষ করে দিঘা, মন্দারমণিতে এর মধ্যেই ভিড় দেখা যাচ্ছে। এখন পাহাড়ে অসময়। তা সত্ত্বেও দার্জিলিঙে পর্যটক আসছেন এখন। সেখানে সর্বত্র সতর্ক না হলে করোনার তৃতীয় ঢেউকে ত্বরান্বিত করা হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, তাই এই নিয়মগুলি মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এবং একই সঙ্গে সকলের ক্ষেত্রে মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মানাও আবশ্যিক।
বিভিন্ন সংগঠনের তরফে অবশ্য এর পাশাপাশি কিছু সমস্যার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, ১৮ বছরের উপরে যারা, তাদের এখনও দু’টি টিকা সম্পূর্ণ হওয়ার সময় হয়নি। একই ভাবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকাই শুরু হয়নি। প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আরটিপিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট লাগবে। তবে একেবারে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কী হবে, তা স্পষ্ট নয়। আবার আরটিপিসিআর টেস্টের রিপোর্ট কোনও পর্যটন কেন্দ্রের হোটেল বা হোম-স্টেতে ঢোকার আগের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেকার হতে হবে বলে জানানো হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাইরের রাজ্য থেকে যাঁরা আসেন, তাঁরা সিকিম, দার্জিলিং-কালিম্পং ও ডুয়ার্স মিলিয়ে একাধিক জায়গায় যান। এ বারে কেউ যদি ৪৮ ঘণ্টা পুরনো নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে প্রথমে সিকিমে যান এবং সেখানে ২-৩ দিন ঘুরে তার পরে দার্জিলিঙে আসেন, তা হলে তখন সেই রিপোর্টে কি কাজ হবে? নাকি তাঁদের নতুন করে পরীক্ষা করাতে হবে? এই পরিস্থিতিতে দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে ঢোকার মুখে সরকারি পরীক্ষা থাকার কথাও জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন, কতটা কঠোর নজরদারি চালানো সম্ভব প্রশাসনের পক্ষে? পর্যটন ব্যবসায়ী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল, সিআইআই চেয়ারম্যান সঞ্জয় টিব্রুওয়াল বা হোটেল মালিক সংগঠনের দাওয়া ছাঙ্গে ভুটিয়াও বাড়তি সতর্কতার জন্য প্রশাসনের নজরদারির কথা বলেছেন।