কালিয়াচক ২ ব্লকের একটি গ্রামের রাস্তা ব্যারিকেড করে পুলিশি প্রহরা বসেছে। নিজস্ব চিত্র
শুক্রবারই জেলায় একদিনে রেকর্ড সংখ্যক ৩১ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলায় ফের ১১ জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে জানাল স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, এ ছাড়াও মুম্বই ফেরত জেলার আরও দুই বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মুম্বই থেকে ফেরার পথে পুরুলিয়ায় তাঁদের লালারস পরীক্ষা হয়েছিল এবং এ দিন তাঁদের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ফলে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁল ১০০। সূত্রের মতে, শনিবারে জেলায় আক্রান্ত কারওরই বাহ্যিক উপসর্গ প্রকাশ পায়নি।
এদের মধ্যে পাঁচজন কালিয়াচক ১, চারজন কালিয়াচক ২ ও দু’জন কালিয়াচক ৩ ব্লকের বাসিন্দা। এই প্রথম কালিয়াচক ৩ ব্লকে দু’জন আক্রান্ত হলেন। আক্রান্তরা সকলেই নির্মাণশ্রমিকের কাজ করতেন এবং মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন বলে খবর। প্রশাসন জানায়, জেলায় ফিরে আসার পর মালদহ গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তারপর তাঁরা কেউ সরকারি কোয়রান্টিন বা কেউ হোম কোয়রান্টিনে ছিলেন। রবিবারই ১১ জনকে কালিয়াচকের সুজাপুর পলিটেকনিক কলেজে চালু করা আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত দু’দিনে মালদহ জেলা কোভিড হাসপাতাল থেকে সাতজন আক্রান্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ফলে এ পর্যন্ত জেলায় ২২ জন সুস্থ হলেন।
স্বাস্থ্য দফতর জানায়, শনিবার নতুন করে যে ১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে পাঁচজন কালিয়াচক ১ ব্লকের বাসিন্দা। একজনের বাড়ি আলিনগরের বাহাদুরপুরে। দু’জনের বাড়ি মোজমপুর পঞ্চায়েতের হারুচকে। একজনের চাঁদপুরের হিম্মত নগরে ও বাকি একজনের কালিয়াচকে। পুলিশ সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলির রাস্তা বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দিয়েছে।
কালিয়াচক ২ ব্লকেও চারজন আক্রান্ত হয়েছেন। তিনজন মোথাবাড়ি ও একজনের গঙ্গাপ্রসাদ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। এদের মধ্যে মোথাবাড়ির চকপ্রতাপপুরের বাসিন্দা এক আক্রান্তের পরিবার সূত্রে খবর, গৌড়কন্যা বাস টার্মিনালে লালারসের পরীক্ষা হয়েছিল এবং তিনি গ্রামে গেলেও বাড়িতে ঢোকেননি, একটি প্রাইমারি স্কুলে ছিলেন। শনিবার বিকেলেই বাড়ি ফিরে আলাদা ঘরে থাকছিলেন বলে খবর।
শনিবার কালিয়াচক ৩ ব্লকে আক্রান্ত দু’জনের মধ্যে একজনের বাড়ি শাহবানচক পঞ্চায়েতের সিকস্তি এলাকায়। ১৮ তারিখ ফেরার পর লালারস পরীক্ষা হয় এবং তারপর সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন। এ দিন তাঁকে আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। ব্লকের আর এক আক্রান্তের বাড়ি বীরনগর ২ পঞ্চায়েতের
পাঁচুটোলায়। পুরুলিয়ায় যাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল তাঁদের কালিয়াচক ২ ও মানিকচক ব্লকে। এ দিন তাঁদের রিপোর্ট হাতে পায় প্রশাসন। তারপরই তাঁদের আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলায় নতুন করে আক্রান্তদের এ দিন আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলায় আক্রান্ত যেমন বাড়ছে তেমনি ২২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।’’