ভোগান্তি: দীর্ঘ পথ হেঁটে ক্লান্ত। পাগলিগঞ্জ থেকে বালুরঘাটের পথে এক শ্রমিক। ছবি: অমিত মোহান্ত
মালদহ মেডিক্যালের ভাইরোলজি ল্যাবে ফের ব্যাকলগ বেড়ে দেড় হাজারের কাছাকাছি হল। দীর্ঘ দিন ধরে লালারসের নমুনার ব্যাকলগ থাকায় সরকারি কোয়রান্টিনে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে করোনাভাইরাস ‘পজ়িটিভ’ কারা, সেটাও দ্রুত জানা যাচ্ছে না। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। এ দিকে ট্রেন ও বাস-ট্রাক করে প্রতিদিনই কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক নামছেন জেলায়। তাঁদের লালারস সংগ্রহের পরিমাণও কিন্তু অনেকটাই কম। এই পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধী দলগুলির। এ দিকে, স্বস্তি এটাই যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে জেলায় কেউ আক্রান্ত হননি। ফলে আক্রান্ত এখনও ১৫৭ জনই।
গত সপ্তাহেই লালারসের নমুনার ব্যাকলগ সাড়ে চার হাজারে পৌঁছে গিয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই ব্যাকলগ কমাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার এক হাজার নমুনা পাঠানো হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার ভাইরোলজি ল্যাবে। পাশাপাশি এই ল্যাবে ‘পুল টেস্ট’-এ জোর দেওয়া হয়। বেশি সংখ্যক পুল টেস্ট করে এক সপ্তাহে ৬০০-র কাছাকাছি ব্যাকলগ নামিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার রাতে ফের তা পৌঁছে গিয়েছে ১৩৩৮-টিতে। এ দিকে প্রতিদিন ভিন্ রাজ্য থেকে তিন থেকে চার হাজার শ্রমিক নামলেও মালদহ স্টেশন বা গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
কিছু নমুনা নেওয়া হচ্ছে, তা বিভিন্ন ব্লকে থাকা সরকারি কোয়রান্টিনগুলি থেকে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বুধবার রাত ১১টা পর্যন্ত জেলার ল্যাবে মাত্র ৩২০টি নমুনা জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২৯১টি মালদহ জেলার, বাকিটা দক্ষিণ দিনাজপুরের। নমুনা জমা পড়ছে কম, অথচ ব্যাকলগ কেন বাড়ছে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগ, ব্যাকলগ বেড়ে চলায় সরকারি কোয়রান্টিনে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে কারা ‘পজ়িটিভ’ হয়ে আছেন তা জানা যাচ্ছে না। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘‘একেই জেলায় ফেরা সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের লালারসের নমুনা নেওয়া হচ্ছে না, তার উপর ব্যাকলগ বাড়ছে। দ্রুত নমুনা পরীক্ষা না হওয়ায় সংক্রমণের আশঙ্কা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি নিয়ে উদাসীন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘নমুনা সংগ্রহের ১০ থেকে ১২ দিন পরেও ফল মিলছে না। ফলে সরকারি কোয়ারান্টিনে থাকা পরিযায়ীরা কে পজ়িটিভ, আর কে নেগেটিভ, সেটা জানা যাচ্ছে না। ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বাড়িয়ে ব্যাকলগ কমানোর চেষ্টা করছি। পুল টেস্টে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।