Coronavirus

করোনা ভয়ে চিতাবাঘ, বাঘও কোয়রান্টিনে

বেঙ্গল সাফারি পার্ক মুক্ত চিড়িয়াখানা। তবে সেখানে বাঘ, চিতাবাঘের খাঁচা বা বাসস্থানও রয়েছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী ও অরিন্দম সাহা 

শিলিগুড়ি ও কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৪৮
Share:

সুরক্ষায়: রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রাজার খাঁচা জীবাণুমুক্ত করতে স্প্রে করা হচ্ছে। দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে। ছবি: বন দফতরের সৌজন্যে

কথায় বলে, বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা। এ-ও যেন তাই।

Advertisement

নিউইয়র্কের চিড়িয়াখানায় ‘নাদিরা’ নামে বাঘিনীর করোনা সংক্রমণের পরে আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বেঙ্গল সাফারি পার্ক এবং দক্ষিণ খয়েরবাড়ির কর্তৃপক্ষ। ‘কোয়রান্টিনে’ পাঠানো হয়েছে দুই জায়গার বাঘ এবং চিতাবাঘেদের। তাদের বাসস্থানগুলিও জীবাণুমুক্ত করার শুরু হয়ে গিয়েছে।

বেঙ্গল সাফারি পার্ক মুক্ত চিড়িয়াখানা। তবে সেখানে বাঘ, চিতাবাঘের খাঁচা বা বাসস্থানও রয়েছে। আপাতত এখানে ৪টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং ৫টি চিতাবাঘ আছে। ডুয়ার্সের দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে বাঘ একটি এবং বেশ কয়েকটি চিতাবাঘ রয়েছে। সব ক্ষেত্রেই বাঘেদের কোয়রান্টিন শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, সোমবারই সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটি এবং ন্যাশনাল টাইগার কনজ়ারভেশন অথরিটি চিঠি দিয়ে সাফারি পার্কের আধিকারিকদের চূড়ান্ত সতর্ক হতে বলেন। পার্কের যে কর্মীরা বাঘের দেখাশোনা করেন, তাঁদেরও পিপিই বা পুরোদস্তুর ব্যবস্থা না নিয়ে বাঘেদের কাছে যেতে মানা করা হয়। নিয়মিত মাস্ক, দস্তানা, হেড এবং লেগ গিয়ার ব্যবহার করছেন কর্মীরা। প্রত্যেক বাঘকে আলাদা শেল্টার হোম এবং ঘোরাফেরার জন্য আলাদা ‘ক্রলে’ রাখা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে গতিবিধি দেখা চলছে। স্নান, খাওয়া এবং ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনওরকম ভাবে ছোঁয়া হচ্ছে না। একটি বাঘের ব্যবহারের জিনিসপত্র অন্যটির জন্য রাখা হচ্ছে না।

বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা ধর্মদেব রাই বলেন, ‘‘পার্কে রয়্যাল বেঙ্গল এবং চিতাবাঘেরা পুরোপুরি আলাদা রয়েছে। মেলামেশার বিষয় নেই। আর কর্মীরা চূড়ান্ত সতর্ক হয়ে কাজ করছেন। আমাদের প্রতিটি বাঘ সুস্থ এবং স্বাভাবিক রয়েছে।’’

দক্ষিণ খয়েরবাড়ির পুনর্বাসন কেন্দ্রের ছবিও একই রকম। সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোচবিহার বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “সবসময় নির্দেশিকা মেনেই সেখানে পরিচর্যা ও দেখভালের কাজ হয়। আশা করি, কোনও সমস্যা হবে না। তবে নজর রাখা হচ্ছে।” তিনি জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য দফতরে পিপিই চাওয়া হয়েছে। রসিকবিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোচবিহার বন বিভাগের ডিএফও বিমান বিশ্বাস বলেন, “চিন্তার কিছু নেই। নির্দেশিকা মেনে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” তিনি জানান, রেঞ্জ অফিসার সুরঞ্জন সরকার বুধবার ওই ব্যাপারে কাজের তদারকিতে রসিকবিল মিনি চিড়িয়াখানায় যান।

বন দফতর সূত্রে খবর, করোনা সতর্কতায় আগে থেকেই দুই এলাকায় পর্যটক প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে মানুষ থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা কমেছে। সুন্দরবনের ঝড়খালি থেকে খয়েরবাড়িতে আনা হয়েছিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রাজাকে। এছাড়াও এখানে আছে গরিবা ও রিমঝিম নামে দু’টি চিতাবাঘ। বেঙ্গল সাফারি পার্কে চারটে বাঘ বিভান, শীলা, কিকা এবং রিকা। চিতাবাঘের মধ্যে সচিন, সৌরভ রয়েছে। আছে শীতল, কাজল ও শিম্বাও।

দুই জায়গারই খবর, ঘোগের প্রবেশ এখনও হয়নি। তাই সুস্থই আছে বাঘেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement