চিকিৎসকের অভাবের ‘প্রভাব’ পরিষেবায়
R G Kar Hospital Incident

কর্মবিরতির জেরেই কি ভর্তি নিতে ‘অনীহা’!

ভর্তির করার দরকার থাকলেও রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া, অনেক ক্ষেত্রে রোগ সম্পূর্ণ ভাল না হতেই রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

Advertisement

সৌমিত্র কুন্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৩
Share:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে । —ফাইল চিত্র।

ফাঁসিদেওয়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছিল সুশীল রায় নামে এক রোগীকে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে তাঁকে ভর্তি না করিয়ে সাদা কাগজে ওষুধ লিখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আবার, রাজগঞ্জের মান্তাপাড়ার বাসিন্দা জিয়াসুদ্দিন আহমেদকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছিল শনিবার সন্ধ্যা ৭টায়। পুরোপুরি সুস্থ না হতেই রবিবার সকালে তাঁকে ছুটি করে দেওয়া হয় বলে পরিবারের দাবি।

Advertisement

এ দিন পেটের যন্ত্রণা নিয়ে ফাঁসিদেওয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে, সেখানকার চিকিৎসকের সুশীলকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শে দেন। তাঁর ছেলে সুব্রত বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে এক্স-রে করতে বলা হয়। তা করা হলে ভর্তি করাতে বলা হয়। ওয়ার্ডের চিকিৎসক দেখে, একটি সাদা কাগজে ওষুধ লিখে দিয়ে বলেন, দু’দিন খাওয়ার পরেও না কমলে, ভর্তি হতে। ভর্তির যে নথিপত্র করা হয়েছিল, তা তাঁরা নিয়ে নেন।’’ তবে রাতে রোগী ভাল রয়েছে, জানান পরিজনেরা। জিয়াসুদ্দিনের ছেলে রাকেশের অভিযোগ, ‘‘বাবা পুরোপুরি সুস্থ নয় বলে মনে হচ্ছে। দুই-এক দিন রাখলে ভাল হত।’’

বস্তুত, চিকিৎসকের অভাবে মেডিক্যালে সহজে রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ভর্তির করার দরকার থাকলেও রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া, অনেক ক্ষেত্রে রোগ সম্পূর্ণ ভাল না হতেই রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি এবং জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। সিনিয়র চিকিৎসকদের সামলাতে হচ্ছে বহির্বিভাগ, অন্তর্বিভাগও। তার জেরেই অন্তর্বিভাগে বেশি রোগী ভর্তির চাপ নিতে চাইছেন না চিকিৎসকদের একাংশ বলে অভিযোগ রোগীদের পরিবারের।

Advertisement

হাসপাতাল সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘তেমন কোনও অভিযোগ মেলেনি। আসলে চিকিৎসকেরা ভাল বুঝবেন, কোন রোগীকে ভর্তি করানো দরকার বা না করালেও চলবে। ভর্তির দরকার থাকলে, অবশ্যই করাবেন। তাতে কোনও সমস্যা নেই। সমস্ত ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি রয়েছে।’’ কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে জেলা বা ব্লক হাসপাতালে যে চিকিৎসা হওয়ার কথা, তা না করেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই প্রবণতা এখন নয়, দীর্ঘদিনের।

আর জি করের ঘটনার পরেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও কর্মবিরতি রেখে আন্দোলনে নেমেছেন পিজিটি এবং জুনিয়র চিকিৎসকেরা। নয়াদিল্লি এমসের মতো হাসপাতালে ইতিমধ্যেই কর্মবিরতি তুলে পরিষেবার কাজে নেমেছেন চিকিৎসকেরা। তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা হয়নি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে বহির্বিভাগে সিনিয়র চিকিৎসকরাই পরিষেবা দিচ্ছেন। অন্তর্বিভাগও কার্যত তাঁদের উপরে নির্ভর করেই চলছে।

আন্দোলনকারীদের তরফে এ দিনও জরুরি বিভাগের সামনে দিনভর অবস্থান-আন্দোলন চলে। তাঁদের তরফে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগে জুনিয়র ডাক্তার, পিজিটি সকলেই পরিষেবা দিচ্ছেন। সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement