বুধবার কার্শিয়াঙে বিয়েবাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
ভাইপো আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কার্শিয়াঙে পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিকেলেই পাহাড়ে পৌঁছন তিনি। পাহাড়ি শহরে মমতাকে স্বাগত জানান গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা অনীত থাপা। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছিল। অভ্যর্থনা গ্রহণ করে বিয়েবাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন মমতা।
আটের দশক থেকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে পাহাড়ের সম্পর্ক খুব একটা মধুর ছিল না। জ্যোতি বসু থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য— দুই বাম মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রেই এ কথা সত্য। পরিস্থিতি বদলেছে মমতার জমানায়। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাহাড়ি নেতৃত্বের সঙ্গে নরমে-গরমে সম্পর্ক গড়িয়েছে তাঁর। শেষ পর্যন্ত, বহু বছর পর, বাংলার কোনও শাসকদল শক্তিশালী জোটসঙ্গীও খুঁজে পেয়েছে সেখানে। তৃণমূলকে জোটসঙ্গী করে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাই গত পঞ্চায়েত ভোটে বিরাট জয় পেয়েছে। মমতা তাঁর রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ছাপ ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠা করেছেন পাহাড়ে। এ বার সেই পাহাড়ের সঙ্গে তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার মুখে।
বুধবার বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে সোজা কার্শিয়াঙের উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। কার্শিয়াং রেল স্টেশনের সামনে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। মূল শহরে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় পৌঁছনোর পরেই তাঁর সামনে নাচেগানে মেতে ওঠেন পাহাড়বাসীরা। মোর্চার দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে পাহাড়ি সাজে পাহাড়ি কায়দায় নৃত্য পরিবেশন করা হয়। গাড়ির ভিতর থেকেই সেই অনু্ষ্ঠান উপভোগ করেন মমতা। সেখানেই বেশ কিছু ক্ষণ তাঁকে অনীতের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
এর পর কার্শিয়াঙের মূল শহর ছেড়ে আমা মকাইবাড়ি বাংলোর উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলোয় খানিক ক্ষণ বিশ্রাম নেন। তার পর যান তাজ চিয়া কুটিরে। মমতার ভাইপোর বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সেখানেই চলছে। বিয়েবাড়িতে বেশ কিছু ক্ষণ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান তিনি।
বিয়েবাড়ি থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় আবার পৌঁছয় আমা মকাইবাড়ি বাংলোয়। বুধবার সেখানেই তিনি রাত্রিবাস করবেন।
মমতার ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে আবেশ। তিনি পেশায় চিকিৎসক। কার্শিয়াঙের তরুণীর সঙ্গে আবেশের বিয়ে বৃহস্পতিবার। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মমতা। মমতা জানিয়েছিলেন, তাঁর ভাইপোর বিয়ের বরকর্তা হলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তার কারণও ব্যাখ্যা করেছিলেন নিজেই। জানিয়েছিলেন, আবেশের ভিক্ষা মা ফিরহাদের স্ত্রী।
৬ এবং ৭ ডিসেম্বর পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর ৮ তারিখ কার্শিয়াঙে সরকারি সুবিধা বিলির সভা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। ৯ ডিসেম্বর বাগডোগরা থেকে আকাশপথে হাসিমারা যাওয়ার কথা তাঁর। রাতে আলিপুরদুয়ারে থাকার কথা। অনুষ্ঠান করে রাতে সেখানে থেকে পরের দিন জলপাইগুড়ির বানারহাটে যাবেন তিনি। তার পরে শিলিগুড়ি ফিরে সভা করে কলকাতা ফিরবেন ১২ ডিসেম্বর।