Calcutta High Court

হোমে কিশোরের মৃত্যু, কড়া অবস্থান নিল সার্কিট বেঞ্চ

কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ জলপাইগুড়ির জেলাশাসককে ফের তদন্ত করে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৫৯
Share:

ফাইল চিত্র।

তার জামিনের আবেদনের শুনানি চলছিল। সেই সময় সরকারি এক হোমের আবাসিক সে বিচারাধীন কিশোর ‘আত্মহত্যা’ করে। কিন্তু সে ঘটনার রিপোর্টে সন্তুষ্ট হল না কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ জলপাইগুড়ির জেলাশাসককে ফের তদন্ত করে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে জেলাশাসককে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, মৃত কিশোরের মায়ের দেখভাল করতে হবে। এখানেই শেষ নয়, কিশোরের ‘আত্মহত্যা’র ঘটনা নিয়ে কারও তরফে কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না, তা জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ রিপোর্টও চেয়েছে।

কোচবিহারের মাদক বিরোধী আইনের (এনডিপিএস) আদালতের বিচারক, সরকারি আইনজীবী, বিপক্ষের আইনজীবী, জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি এবং সরকারি ওই কোরক হোমের সুপারের কাছে ওই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। আইনজীবীদের দাবি, জামিনের আবেদনের মামলার শুনানি চলাকালীন কিশোর আত্মহত্যা করেছে শুনে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

গত ১৫ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ির এই হোমে মাদক-বিরোধী আইনে ধৃত এক বিচারাধীন কিশোরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সে ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে দাবি করা হয় হোমের তরফে। কিন্তু কিশোরের পরিবারের দাবি, হাই কোর্টে জামিনের আবেদনের শুনানি চলছিল এবং তাঁদের পক্ষেই রায় হতে পারে এমন কথা কিশোরকে জানানোও হয়েছিল। তার পরেও সে কেন আত্মহত্যা করবে, প্রশ্ন ছিল পরিবারের।

এ দিকে, হাই কোর্টে চলতে থাকা জামিনের আবেদনের মামলা গত সপ্তাহের সার্কিটে তালিকাভুক্ত হয়। কিশোরের মৃত্যুর খবর আইনজীবীকে জানায়নি পরিবার। গত ৬ জানুয়ারি মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ কিছু নথি চায়। সে দিনই আইনজীবী সুমন সেহানবীশ কিশোরের মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা জানতে পারেন। গত ৯ জানুয়ারি, পরের শুনানিতে আইনজীবী সুমন সেহানবীশ ডিভিশন বেঞ্চে কিশোরের মৃত্যুর কথা জানান এবং পরিবারের বিভিন্ন দাবিও তুলে ধরেন। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ কোরক হোমের কাছ থেকে তদন্ত ও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। গত ১১ জানুয়ারি সে সব রিপোর্ট জমা পড়ে।

এ দিন হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কিশোরের মৃত্যু নিয়ে নিজেদের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছে। কিশোরের আইনজীবী সুমন সেহানবীশ বলেন, “কিশোরের মৃত্যুর পরে, পরিবারের তরফে আর কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের থেকে গাফিলতি রয়েছে কি না, সে রিপোর্ট চেয়েছে।”

মামলায় সরকারি আইনজীবী বিশ্বরূপ রায় বলেন, “হোমে কিশোরের মৃত্যু নিয়ে জেলাশাসককে ফের তদন্ত করতে হবে। কিশোরের মায়ের দেখভালও করতে হবে। এনডিপিএস আদালতের বিচারক, সরকারি এবং বিপক্ষের আইনজীবী, আইসি কোতোয়ালি, হোমের সুপারকে নিজেদের কর্তব্য নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement