পাহাড়ে আন্দোলনের ডাকে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। — ফাইল চিত্র।
বিধানসভায় সদ্য পাশ হওয়া বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এবং গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলে পাহাড়ে আবার আন্দোলনের পথে বিনয় তামাং, হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড-সহ জিটিএ-র ৭ সদস্য। তাঁরা শুরু করেছেন অনশনও। বছর ছ’য়েক আগে টানা বন্ধের জেরে পাহাড়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পর্যটন ব্যবসা। পাহাড়ে আবার নতুন করে আন্দোলনের আবহে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
ছ’বছর আগে টানা ১০৩ দিন ধরে বনধ্ চলেছিল পাহাড়ে। ২০১৭ সালের ৩১শে আগস্ট এই বিনয়ই ঘোষণা করেছিলেন বন্ধ প্রত্যাহারের। এই বার অবশ্য ভিন্ন ভূমিকায় বিনয়। আবার তাঁরা আন্দোলনের পথে। এই ঘোষণায় আতঙ্কিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘এটা খুবই হতাশাজনক। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু বনধ্ যাতে না হয় তার অনুরোধ করছি। অনেক সময় লেগেছে। প্রায় ৫ বছর পর আবার পাহাড়ের পর্যটন আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। আবার যদি কোমর ভেঙে যায় তা হলে আর বাঁচানো যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আমাদের অনুরোধ, বনধ্ বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাঁরা কর্মসূচি পালন করুন।’’ যদিও আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচিকে ‘বন্ধ’ বলতে চান না আন্দোলনকারীরা। বিনয়ের দাবি, আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পাহাড়ের মানুষের কাছে বাড়ি থেকে না-বেরোনোর আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। ওই দিন থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষাও। আন্দোলনকারীদের দাবি, পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা করে আন্দোলন হবে না।
পাহাড়ে এখন পর্যটনের মরসুম। এই আন্দোলন তাতে আঁচ ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজার্ভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহবায়ক রাজ বসুর। তিনি বলেন, ‘‘খুব কষ্ট করে আমরা এই অঞ্চলটাকে বনধ্ মুক্ত তৈরি করেছিলাম। যে রেকর্ড সংখ্যায় পর্যটকেরা এখন পাহাড়ে আসছেন তার এক মাত্র কারণ শান্তিপূর্ণ পাহাড়। যদি সেই শান্তিই আমরা না রাখতে পারি তা হলে পর্যটন ব্যবসা বা পর্যটকদের আমরা হারাব। করোনা মহামারি আমাদের কাছে একটা বড় ধাক্কা ছিল। এর পর যদি আবার এমন কিছু হয় তা হলে পর্যটনে এটা একটা বড় ধাক্কা হবে।’’
২০১৭ সালে টানা আন্দোলনের কোপ পড়েছিল পাহাড়ের পর্যটনে। এর পর পর্যটন জোরালো ধাক্কা খেয়েছিল করোনা পর্বে। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে দার্জিলিঙের পর্যটন ব্যবসা। এমনটাই জানাচ্ছেন পর্যটনের সঙ্গে যুক্তরা। কিন্তু বিনয়দের ঘোষণা নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল।