হানকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
মালদহের মালিক সুলতানপুর এলাকায় বিএসএফের হাতে বৃহস্পতিবার ধরা পড়েন চিনা নাগরিক হান হান চুনওয়েই। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে তুলে দেওয়া হয়েছিল কালিয়াচকের গুলাবগঞ্জ পুলিশের হাতে। শনিবার মালদহ জেলা আদালতে তোলা হয়েছে হানকে। ১৮ জুন অবধি তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ধরা পড়ার পর মোহাদিপুর বিএসএফ আউটপোস্টে আনা হয়েছিল হানকে। সেখানে গত দু’দিন ধরে দফায় দফায় জেরা করার পর বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তার কাছ থেকে সন্দেহজনক বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স জিনিস উদ্ধার হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিএসএফ সেগুলি জমা দিয়েছে পুলিশকে। বিএসএফ জানিয়েছে, ভারত থেকে তোলা প্রায় ১ হাজার ৩০০ সিম কার্ড চিনে পাচার করেছেন হান। ভুয়ো পরিচয়পত্র দিয়ে তোলা হত ওই সিম। অ্যাকাউন্ট হ্যাকের পাশাপাশি বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতারণা করতে ওই সব সিম ব্যবহার করা হত বলে জানতে পেরেছে বিএসএফ।
শুক্রবার উত্তর ভারতের গুরুগ্রামের সঙ্গে হানের যোগাযোগের কথা জানিয়েছিল বিএসএফ। সেখানে সাং জুয়াং নামে হানের এক বন্ধু ছিলেন। তাঁর সঙ্গে মিলে একটি হোটেলও চালাতেন হান। কিছু দিন আগে সাং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর উঠে আসে হানের নাম। তখন উত্তরপ্রদেশ পুলিশ লখনউয়ে হান এবং তাঁর স্ত্রীর নামে মামলা দায়ের করেছিল। ওই মামলার জেরেই হানকে ভারতের ভিসা দিতে অস্বীকার করে চিন। তখন ঘুরপথে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেন হান। এ জন্যই বাংলাদেশ এবং নেপালের ভিসা নিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯-এ প্রথম ভারতে আসেন হান। তার পর একাধিক বার ভারতে এসেছেন তিনি। গত ৮ জুন বাংলাদেশের চাপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ জেলার একটি হোটেল ভাড়া নেন। সেখানে দু’দিন কাটিয়ে ১০ জুন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢোকার সময়েই গ্রেফতার হন। এর পরই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শনিবার মালদহ জেলা আদালতে তোলা হলে হানকে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজরিয়া বলেছেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএসএফ পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ধৃত চিনা নাগরিককে। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়েছিল। তদন্তের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’’ চিনা নাগরিকের আইনজীবি দেবান্দ তামাং বলেছেন, ‘‘চিনা নাগরিকের কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট রয়েছে। ভারতের সীমানা না বোঝার জন্য ভুল করে চলে এসেছে। পুলিশের তদন্ত রিপোর্টের পর আইনি প্রক্রিয়া করা হবে।’’