শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া এলাকায় আড়াই কিলোমিটারে কাটাতাঁরের বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। ছবি বিনোদ দাস।
বাংলাদেশ পরিস্থিতির জেরে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। সেই সঙ্গে সীমান্ত বেড়া মেরামতিতেও জোর দিচ্ছে তারা। শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়ার আড়াই কিলোমিটারে কাটাতাঁরের বেড়া পাকাপোক্ত ছিল না এত দিন। বাঁশের বেড়ার সঙ্গে মাটিতে কাঁটা শিকল দিয়ে ঘেরা ছিল। নতুন পরিস্থিতিতে লোহার স্তম্ভ বসিয়ে মজবুত কাঁটাতার লাগানো শুরু হল শুক্রবার থেকে। বিএসএফের উত্তরবঙ্গের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক অমিত ত্যাগী বলেন, ‘‘ফাঁকা সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কাজের সুবিধায় কয়েকটি এলাকায় আগে থেকে কাঁটাতার দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। ফাঁসিদেওয়ার বিষয়টি খোঁজনিতে হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, দুই দেশের ভৌগোলিক সীমারেখা নিয়ে টানাপড়েনের জেরে ফাঁসিদেওয়ার ধনিয়া মোড় থেকে সদর বাজার পর্যন্ত খোলা সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া ছিল না। সেখানে সীমান্তে-ঘেঁষা শতাধিক পরিবার রয়েছে। জিরো পয়েন্ট থেকে যতটা দূরে কাঁটাতার দেওয়া প্রয়োজন সেই হিসাবে কাঁটাতার দিতে হলে পরিবারগুলি বাংলাদেশের দিকে পড়বে। নয়তো তাদের ভারতের দিকে অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই অবস্থায় সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বিএসএফ অস্থায়ী ভাবে কাজ চালানোর মতো বাঁশের বেড়ার সঙ্গে মাটিতে কাঁটা শিকলগুলি দিয়েছিল। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নতুন করে ভাবাচ্ছে বিএসএফকে। সে জন্য তড়িঘড়ি শুরু হয়েছে লোহার স্তম্ভ বসিয়ে কাঁটাতার দেওয়ার কাজ। অনেক রাতের দিকেও কাজ চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
দুই দেশের মধ্যে সেখানে মহানন্দা নদী সীমান্ত হয়ে রয়েছে। প্রায় ৫০০ মিটারের ব্যবধান। বাংলাদেশের পরিবার, বসত বাড়ি, গাছপালা সীমান্তের পাশে দাঁড়ালে স্পষ্ট দেখা যায়। নদী থেকে বালি তোলার অভিযোগ উঠত বাংলাদেশের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নদীতে নামতে দেওয়া হচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদী থেকে বালি তোলার নাম করে অনেক সময় ভারতের দিকে ঢুকে যেত বাংলাদেশিরা। সে জন্য কাঁটাতার আবশ্যক। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, ‘‘সীমান্তের বিষয়। আন্তর্জাতিক বিষয় বিএসএফ গুরুত্ব দেওয়ারই কথা।’’ শুক্রবার ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে রফতানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। তবে এ দিন বাংলাদেশ থেকে ৭২ জন এ-পারে এবং এ-পার থেকে ৪৫ জন বাংলাদেশে গিয়েছেন।