—ফাইল চিত্র।
প্রথমেই বলে রাখা ভাল, পরিমিত কফি শরীরের ক্ষতি করে না। বরং বেশ কিছু উপকারই করে। তবে একই সঙ্গে এ-ও জেনে রাখা উচিত যে, কফিতে আছে ক্যাফিন। যা প্রাকৃতিক ভাবেই উদ্দীপকের কাজ করে। শরীরে গিয়ে সরাসরি প্রভাবিত করে হরমোনকে। যার ফলে মুহূর্তে চনমনে হয় মেজাজ। তাই খুব বেশি পরিমাণে ক্যাফিন শরীরে যাওয়াও উচিত নয়।
আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানাচ্ছে প্রতিদিন শরীরে ৪০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফিন যাওয়া উচিত নয়। যার অর্থ সারা দিনে শুধু চার কাপ কফি খাওয়া যেতে পারে। তবে কফি কে খাচ্ছেন, তাঁর শরীর কতটা ক্যাফিন নিতে পারছে, তার উপরও বিষয়টি নির্ভর করবে। এমনও হতে পারে কারও নিয়মিত পাঁচ কাপ কফি খেয়েও কোনও সমস্যা হল না। আবার কারও ক্ষেত্রে নিয়মিত তিন কাপ কফি খেয়েও ক্যাফিনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ল শরীরে।
—ফাইল চিত্র।
কফিতে ক্ষতি কী?
১। ক্ষতির মাত্রা কমই। তবে নিউ ইয়র্কের বাফালো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে, যাঁদের হার্টের অসুখ আছে, যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে বা যাঁরা অনিদ্রারোগী, তাঁদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যাফিন সমস্যা তৈরি করতে পারে।
২। পরিণত বয়স্কদের কারও কারও অতিরিক্ত কফি খেলে রাতে ঘুম আসার সমস্যাও হতে পারে।
৩। কয়েকটি গবেষণায় এমনও বলা হয়েছে যে, কফি কর্টিসলের মাত্রা যে হেতু বাড়িয়ে দেয়, তাই দীর্ঘ দিন বেশি কফি পান করার অভ্যাস থাকলে অনেক সময়ে তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে শরীর। তখন কফি খেয়েও কর্টিসলের মাত্রা বা়ড়ে না।
৪। কর্টিসল হল স্ট্রেস হরমোন। অর্থাৎ এমন হরমোন, যা মানসিক চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করতে কাজে আসে। একই সঙ্গে রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া প্রদাহও নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন। তাই কর্টিসল ক্ষরণের মাত্রা না বাড়লে শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা হতে পারে।
৫। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যলয়ের একটি গবেষণা বলছে, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে গর্ভস্থ ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি, ভ্রুণ পরিণত হওয়ার আগেই প্রসব করাতে হতে পারে। তাই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের দিনে ১-২ কাপের বেশি কফি খাওয়া উচিত নয়।
—ফাইল চিত্র।
আপনি কী করবেন?
১। দিনে চার কাপ কফি খাওয়াই যায়। তাতে বরং উপকারই বেশি। তবে খালি পেটে প্রথমেই কফি খেতে নিষেধ করেন পুষ্টিবিদেরা। তাই কফির সঙ্গে হালকা কিছু খান।
২। চিনি দিয়ে কফি খেলে উপকারের ভাগ অনেকটাই কমে, তাই বেশি কফি খেলে চিনি বর্জন করুন।
৩। দিনে চার কাপ কফি খাওয়ার পরে যদি দেখেন ঘুমের সমস্যা হচ্ছে, তবে পরিমাণ কমান।
৪। ঘুমোনোর আগে অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা কফি না খাওয়াই ভাল, বলেন পুষ্টিবিদদের একাংশ।