প্রতীকী ছবি।
বুথে কারা ভোট করাতে পারদর্শী, তার খোঁজে নেমেছে শাসক ও বিরোধী শিবির। তৃণমূল ও বিজেপি মনে করছে, ভিড় টানাটানি যতই হোক, বুথে পিছিয়ে পড়লে পরাজয় নিশ্চিত। সে দিকে নজর রেখেই এমন কর্মীর খোঁজে নেমেছে তারা।
তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বুথে বুথে আমাদের সংগঠন রয়েছে। কর্মীরা ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছেন।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘বুথে বুথে ইতিমধ্যেই আমাদের কমিটি তৈরি হয়েছে।’’
জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, এ বারের লোকসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারে তৃণমূলের ‘আধিপত্য’ ছিল। লোকসভায় তৃণমূলের হাত থেকে ওই আসন ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তারপর থেকেই অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। বিজেপির সংগঠন অনেকটাই শক্তিশালী হয়ে উঠতে শুরু করে। মাস কয়েকের মধ্যেই তৃণমূল নিজেদের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে একাধিক পদক্ষেপ করে। দলের জেলা থেকে ব্লক কমিটিতে নতুন মুখ নিয়ে আসা হয় সামনের সারিতে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল নতুনদের এনে দলে ‘স্বচ্ছতা’র ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চেয়েছে। দল সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু বুথের কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তাঁদের ফের মাঠে নামাতে চাইছেন রাজ্যের শাসকদল। এ জন্যে ভোটের হাওয়া উঠতেই নতুন করে বুথের পারদর্শী কর্মীদের দলের কাজে নামাতে চাইছে দল। শাসক-শিবিরের অন্দরমহলের খবর, দলের কিছু ‘পারদর্শী’ ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে। পুরনোদের মধ্যে যাঁরা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন, তাঁরা নতুন করে আর মাঠে নামতে চাইছেন না। বুথে গিয়ে ওই কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসক দল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘বুথে সবাইকে মাঠে নামাতেই হবে। সে চেষ্টাই করছি আমরা।’’
বিজেপির অবস্থা এ বারের লোকসভা নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি থেকে অনেকটাই আলাদা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে বুথে বুথে বিজেপির কর্মী-সমর্থক ছিলেন না তা নয়। কিন্তু তাঁরা গোপনে কাজ করতেন। ভোটে জিতে যাওয়ার পরে তাঁরা প্রত্যেকেই প্রকাশ্যে ময়দানে নেমেছেন। রাজ্যের শাসকদলের অনেক কর্মীই এখন বিজেপিতে। ফলে তাঁদের কাজ অনেক সহজ হয়েছে বলে মনে করছেন নেতারা।
যদিও এতে চুপচাপ বসে থাকতে রাজি নন বিজেপি নেতৃত্ব। দল মনে করছে, বুথে কর্মী-সমর্থক থাকলেও তাঁরা ইভিএমে ভোট টানতে কতটা পারদর্শী তা স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে পর পর দু’বার বিধানসভা ভোটে সফল তৃণমূল সহজে পথ ছাড়বে না। তাই কর্মীদের নির্দিষ্ট করতেই খোঁজ শুরু করেছেন তারা। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘বুথই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সে ভাবেই কাজ শুরু করা হয়েছে।’’