প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের শাসক দল যখন গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার, তখন বিধানসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রার্থী বাছাইয়ে নেমে পড়ল বিজেপি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কে ভোটে দাড়াতে চান, আর কে সাংগঠনিক কাজে থাকতে চান, তা সরাসরি জেলার শীর্ষ নেতাদের কাছে জেনে নিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দিনতিনেক আগে কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন অমিত মালব্য এবং শিবপ্রকাশ। সেখানে আলাদা ভাবে প্রত্যেক নেতার সঙ্গে কথা বলে তাদের ইচ্ছের কথা জেনে নেওয়া হয়। পাশাপাশি, স্থানীয় যেসব বিষয় ভোটে ইস্যু হতে পারে আলোচনা হয় তা নিয়েও। সেই হিসেবেই ছক কষে ময়দানে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রের শাসক দল।
ওই বৈঠকের বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্ব প্রকাশ্যে কিছু জানাতে নারাজ। দলের কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ সাংগঠনিক বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধে রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে দিচ্ছে না, সে-সব নিয়ে প্রচারে নামা হবে। তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা অবশ্য বলেন, ‘‘কে প্রার্থী হতে চান এবং কে সাংগঠনিক কাজ করতে চান তা জেনে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সে ভাবেই দলের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে বলে জেনেছি।’’
তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, বিজেপির মধ্যে কোন্দল বেধেছে। সে জন্যেই নানা বৈঠক করে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তৃণমূলের র জেলা কো-অর্ডিনেটর অর্ঘ্যরায় প্রধান বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও কোন্দল নেই। বিজেপি নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু করেছে। মানুষ বিজেপির উপরে ক্ষুব্ধ।’’
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের আটটি লোকসভা আসনের মধ্যে সাতটি দখল করেছে বিজেপি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেদিকে নজর রেখেই এ বারে বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমেছে তারা। এই অবস্থায় কোনও ভাবেই যাতে দলের মধ্যে বিধানসভার প্রার্থীপদ নিয়ে লড়াই না শুরু হয়ে যায়, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রেই আরও জানা গিয়েছে, নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, রাজ্য বিজেপির দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে লড়াই তত বাড়ছে। একাধিকবার নতুন ও পুরনো ইস্যু নিয়েও দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। সেই অবস্থার হাত থেকে রেহাই পেতেই আগাম পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির অবশ্য দাবি, তাদের মধ্যে কোনও কোন্দল নেই।