তোড়জোড়: মণ্ডপের পাশে বাঁধা হয়েছে মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র
মণ্ডপের কাজ প্রায় শেষ। আলোকসজ্জাতেও শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। তবুও পুজো ঘিরে যেন তেমন কোনও প্রচার নেই।
গত বছর ওই পুজোর জাকজমক তাক লাগিয়ে দিয়েছিল গোটা ভেটাগুড়িকে। পুজোর একদিন আগে থেকেই আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছিল এলাকা। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, নিশীথ এক কোটি টাকা খরচ করে গণেশ পুজোর আয়োজন করেছেন। এ বারে কোচবিহারের ভেটাগুড়ির সেই নিশীথ প্রামাণিক ভোটে জিতে বিজেপির সাংসদ। বাসিন্দারা ভেবেছিলেন, সাংসদ হওয়ায় এ বারে জাঁকজমক অনেকটাই বাড়বে। কিন্তু আসলে তা হচ্ছে না। অনেকেই মনে করছেন, সাংসদ হওয়ার পরে অনেকটাই যেন সংযত তিনি, মেপে পা ফেলছেন। তাই গণেশ পুজো নিয়েও হইচই কম। নিশীথ অবশ্য জানিয়েছেন, এ বারেও মুম্বই ও কলকাতার শিল্পীরা যোগ দেবেন পুজোর অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন, “গত কয়েক বছর ধরেই আমরা সবাই মিলেই পুজোর আয়োজন করি। এ বারেও তাই করেছি। তা সবার মধ্যেই উন্মাদনা তৈরি করেছে।”
এ বারে ভেটাগুড়ির ওই গণেশ পুজো চার বছরে পা দিল। আজ, সোমবার ওই পুজোর উদ্বোধন হবে। ওই পুজো শুরু করেছিলেন নিশীথ। তিনি সেই সময় যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার দাপুটে নেতা। ক্রমশই তাঁর দাপট যেমন বেড়ে চলছিল, তেমনই তাঁর প্রভাবও বেড়ে চলছিল দলের মধ্যে। অনেকেই দাবি করেন, নিজের শক্তির বোঝাতেই গণেশ পুজো শুরু করেন তিনি। ভেটাগুড়ি কোচবিহারের জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। সেই গ্রামে বসেই শহরের যে কোনও পুজো কমিটিকে যে টেক্কা দেওয়া যায়, তা করে দেখিয়েছিলেন তিনি। মুম্বই ও কলকাতার নামী শিল্পীদের এনে সাড়া ফেলে দেন তিনি। চারদিকে ছড়িয়ে পরে তাঁর নাম। অবশ্য সেই সঙ্গে চলতে থাকে বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, এমন একটি গ্রামে বসে কী করে এত টাকা খরচ করে পুজো করছেন নিশীথ? বিরোধীরা তো বটেই, দলের অন্দরেও তাঁর আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। নিশীথ অবশ্য জানিয়েছিলেন, পুজোর আয়োজন সবাই মিলেই তাঁরা করেছিলেন।
তার পরে অনেক জল গড়িয়েছে। তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। দল তাঁকে লোকসভার টিকিট দেয়। ভোটে জিতে তিনি এখন সাংসদ। দলীয় সূত্রের খবর, সাংসদ হওয়ার পরে নতুন করে বিতর্ক জড়াতে চান না নিশীথ। এমনকি দলও তাঁকে একই পরামর্শ দিয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, দল মনে করছে, তৃণমূল আমলের নিশীথের সঙ্গে বিজেপি’র নিশীথের পার্থক্য সবাইকে দেখানো প্রয়োজন। সে কারণেই দলের পরামর্শেই এগিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে। এ বারে বহু টাকা খরচ করে হইচই করে পুজো করলে নানা প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই সে পথে নিশীথ হাঁটেননি বলে জল্পনা চলছে এলাকায়।