শঙ্কর ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পুর এলাকার পানীয় জল দূষিত হয়ে পড়ায় পানীয় জলের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুরসভা। সঙ্গে বিবৃতি জারি করে শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জল খেতে বারণ করেছিলেন মেয়র গৌতম দেব। এ বার শিলিগুড়ি পুরসভার পানীয় জল কী ভাবে দূষিত হল, এই বিষয়ে তদন্ত চেয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে চিঠি দিলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ।
মে মাসের শেষ সপ্তাহে শিলিগুড়িতে মেয়র গৌতম স্বয়ং ঘোষণা করেছিলেন, পুরসভা থেকে যে জল সরবরাহ করা হয়, তা খাওয়া যাবে না। পুরসভার তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে, কয়েক দিন পানীয় জলের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। মেয়র জানিয়েছিলেন, পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জল কেউ পান করবেন না। জলের মান খারাপ ধরা পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পুরসভার তরফে।
শিলিগুড়িতে বর্তমানে মহানন্দা থেকে জল নিয়ে তা পরিস্রুত করে পানীয় হিসাবে সরবরাহ করে পুরসভা। কিন্তু সেই জলের মান খারাপ ধরা পড়েছে বলে খবর। তাই পুরনিগমের তরফে তা পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। যদিও সেই জল গৃহস্থালির অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছিলেন মেয়র। শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের পানীয় জলের সঙ্কট কেন হল, সেই বিষয় নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়ক শঙ্কর। সাত পাতার চিঠি লিখে, তিনি একঝাঁক প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন শিলিগুড়ি পুরসভাকে। সঙ্গে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে শিলিগুড়ির পানীয় জল নিয়ে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের পাঠানো চিঠি। ছবি: সংগৃহীত।
বিজেপি বিধায়কের চিঠি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে পৌঁছনোর পরেই তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দফতরের আধিকারিকেরা। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ এলাকায় জলের সংযোগ দেওয়া এবং পানীয় জল সরবরাহ করার দায়িত্ব থাকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হাতে। আবার কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পুরসভায় জলে সংযোগ দেওয়া থেকে শুরু করে পানীয় জল সরবরাহের দায়িত্ব থাকে পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরের হাতে। তাই বিজেপি বিধায়ক চিঠি দিলেও, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের শিলিগুড়ির পানীয় জলের সঙ্কট কিংবা জল দূষিত হওয়া নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যা প্রসঙ্গে কিছু করার নেই বলেই জানাচ্ছেন দফতরের এক আধিকারিক।
জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এটা ঠিক যে শিলিগুড়িতে যখন পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল, তখন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে আমরা সেখানে পানীয় জলের পাউচ বিলি করে সাধারণ মানুষের পানীয় জলের চাহিদা মিটিয়েছি। কিন্তু কেন তাদের জল দূষিত হয়েছে, কেনই বা জলসঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে তদন্ত করার এক্তিয়ার আমাদের নেই।’’