গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
মাঠ-বিতর্কে আবার সরব হলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। শুক্রবার কার্শিয়াংয়ে সরকারি অনুষ্ঠানের পর আলিপুরদুয়ার জেলায় সভার কথা রয়েছে মমতার। তারও পর শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তাই স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে সভার প্রস্তুতির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। তারই মাঝে খেলার মাঠে সভা করা নিয়ে আপত্তি তুলে এবং প্রতিবাদে ধর্নায় বসার কথা জানালেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর। যদিও বিধায়কের এই আপত্তিতে আমল দিচ্ছে না শাসকদল এবং শিলিগুড়ি পুরসভা।
শুক্রবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে শঙ্কর বলেন, ‘‘মাঠে তো ঢুকতেই পারলাম না। দুর্গ তৈরি করে তার ভিতর সাজসজ্জা চলছে। মাঠের অন্তর্জলি যাত্রা হচ্ছে, সেটাই দেখলাম। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আগামী ১১ তারিখ বিকেল ৪টে থেকে ১২ তারিখ সকাল পর্যন্ত খেলোয়াড় এবং ক্রীড়াপ্রেমীদের নিয়ে ধর্নায় বসব।’’
বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর ওই অনুষ্ঠানের জন্য শিলিগুড়িতে সুপার ডিভিশন লিগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘খেলার জন্য স্টেডিয়াম। সেটা বন্ধ করে রাজনৈতিক কর্মসূচির সিদ্ধান্ত গা-জোয়ারি সিদ্ধান্ত। এটা হল, আমি যা ইচ্ছা তা করব ব্যাপার।’’ বিধায়কের সংযোজন, ‘‘এই স্টেডিয়ামে সর্বশেষ যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছিল, সেটা স্বনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী অরিজিৎ সিংহের। ব্যক্তিগত ভাবে সে দিন প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। ব্যক্তিগত ভাবে অরিজিৎ সিংহের ফ্যান হওয়ার সত্ত্বেও এবং আয়োজকদের আমন্ত্রণ পেয়েও প্রতিবাদ জানিয়ে ওই সভায় যাইনি। এখন আবার মুখ্যমন্ত্রী আসছেন বলে শিলিগুড়ির সুপার ডিভিশন লিগের টুর্নামেন্ট বন্ধ করা হল!’’ শঙ্করের অভিযোগ, দীর্ঘ এক দশক ধরে উত্তরবঙ্গের খেলাধুলোর পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামকে শ্মশান করার চেষ্টা চলছে। আমি জনপ্রতিনিধি হিসাবে প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সভার সময় ধর্নায় বসব।’’ শিলিগুড়ির বিধায়ক জানাচ্ছেন, বিষয়টি তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে জানাচ্ছেন। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিবাদ করবেন এবং তাঁর দল বিজেপিও যাতে প্রতিবাদ করে, তার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
অন্য দিকে, শঙ্করের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘এর আগেও বহু বার বলেছি, স্টেডিয়াম পুনরায় নির্মাণ করা হচ্ছে। পূর্ত দফতরের আওতায় রয়েছে সেই কাজ। নির্মাণের কাজ শেষ হলে সেখানে আর এ রকম সভা হবে না। আর যে লিগের খেলা চলছিল, তা অনুষ্ঠানের পর পুনরায় চালু করা হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘শঙ্কর ঘোষেরা কী বলছেন, তা আমি বলতে পারব না। প্রশাসন রয়েছে ধর্না বা এই ধরনের কর্মসূচি নিয়ে পদক্ষেপ করার জন্য।’’