বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ একঝাঁক নেতার। —নিজস্ব চিত্র।
দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের আগে বড়সড় ধাক্কা বিজেপি শিবিরে। পদ্মশিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বিজেপি-র কোচবিহার জেলার সম্পাদক সুদেব কর্মকার। তাঁর পথে হেঁটে জোড়াফুল শিবিরে যোগ দিয়েছেন দিনহাটার একাধিক বিজেপি নেতাও। দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের মোট ৩১৬টি বুথের মধ্যে বিজেপি-র ২৮১ জন বুথ সভাপতি রবিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আগামী ৩০ অক্টোবর দিনহাটা, খড়দহ, গোসাবা এবং শান্তিপুর— এই চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন। তার আগে দিনহাটার একাধিক বিজেপি নেতার দলবদল গেরুয়াশিবিরকে জোরালো ধাক্কা দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতির মহলের একাংশ।
সুদেব ছাড়াও তৃণমূলে গিয়েছেন কল্যাণ সরকার। তিনি বিজেপি-র দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক ছিলেন। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েক জন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। রবিবার দিনহাটায় একটি কর্মসূচিতে ওই বিজেপি নেতারা সকলে তৃণমূলে যোগ দেন। দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহের উপস্থিতিতে তাঁরা সকলে তৃণমূলের দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন। তৃণমূলে যোগ দিয়েই বিজেপি-র জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা রায় এবং কোচবিহারের সংসদ নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সুদেব। তিনি বলেন, ‘‘অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দিনহাটায় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনে নিশীথ প্রামাণিক দিনহাটা থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। দিনহাটার মানুষ তাঁকে দুই হাত তুলে আশীর্বাদ করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিনহাটার মানুষকে অসম্মান করেছেন। মালতী রাভা রায় এবং নিশীথ প্রামাণিক বিজেপি দলটিকে কোমায় পাঠিয়ে দিয়েছেন।’’
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান নিয়ে উদয়ন বলেন, ‘‘গত ২৫ মার্চ দিনহাটা শহরে এক নেতার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল বিজেপি। এই সুভাষ ভবনেও ভাঙচুর হয়েছিল। সেই সুভাষ ভবনের সামনে দিনহাটার বিজেপি নেতাদের তৃণমূলে যোগদান করিয়ে ওদের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়া হল। বিজেপি-র পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে নিয়ে আজ তার বদলা নেওয়া হল।’’
বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী অবশ্য বলছেন, ‘‘আজ যাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে চাপের মুখে দল বদলেছেন। ওঁরা তৃণমূলে যোগ দিলেও মন থেকে বিজেপি-ই রয়েছেন। তাঁরা বিজেপি-কেই ভোট দেবেন।’’