ফাইল চিত্র।
সাড়ে তিন বছর পর ফিরে প্রথম সভা করতে চলেছেন বিমল গুরুং। পাহাড়ে নয়, শিলিগুড়ির গাঁধী ময়দানে আজ, রবিবার ওই সভার চূড়ান্ত প্রস্তুতির তদারকি করলেন রোশন গিরি। শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সভাস্থলে ছিলেন।
মোর্চা সূত্রের খবর, এই সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তারা যেমন বিষোদ্গার করতে চলেছে, তেমনি পাহাড়ে বিনয়পন্থী মোর্চার বিরুদ্ধেও তোপ দাগবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, বিধানসভা ভোট সামনে রেখে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা জানিয়ে পাহাড়ে হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া ভাবে সক্রিয় বিমলপন্থীরা। যদিও পাহাড়ের নেতা কেন সমতলে সভা করছেন, তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিনয়পন্থীরা।
সম্প্রতি কলকাতায় আচমকা আত্মপ্রকাশ করে বিজেপির বিরুদ্ধে মোহভঙ্গের কথা জানান বিমল নিজেই। এমনকি, এও জানান যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা কথা দেন, তিনি তা রাখেন। সেই প্রশ্নে তাঁরা তাঁকেই সমর্থন করছেন। বিমলের ওই বার্তার পর বিব্রত বিজেপি শিবির। কেন না লোকসভা ভোটে যতবার বিজেপি দার্জিলিং লোকসভা আসনে তাদের প্রার্থীকে জিতিয়ে এনেছে, তা মোর্চার সমর্থনকে কাজে লাগিয়েই। সেই কারণে পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের পক্ষে বিজেপি বলে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাভাগের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল এবং আরও কিছু রাজনৈতিক দল। এখন বিধানসভা ভোটের মুখে পাহাড়ে বিমলপন্থী মোর্চার ভোটকেও এক ছাতার তলায় আনতে চাইছে তৃণমূল। তাতেই বিপাকে বিজেপি।
সম্প্রতি কার্শিয়াঙে সভা করেন রোশন। তার পাল্টা সভাও করেন অনীথ থাপারা। মোর্চার দুই পক্ষের মধ্যে পাহাড়ে রেষারেষির বাতাবরণ নতুন করে তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
এ দিন রোশন বলেন, ‘‘লক্ষাধিক লোক সমাগম হবে। বিমল গুরুংকে স্বাগত জানাতে তাঁরা আসবেন। জনতা আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি কথা রাখেনি। তারা যে আশ্বাস দিয়েছিল তা থেকে সরে গিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের বলার রয়েছে। তা ছাড়া বিনয় তামাং এবং অনীত থাপা মিলে পাহাড়কে বরবাদ করেছে। তা নিয়েও বার্তা দেবেন বিমলজি।’’
বিমলপন্থীদের এই বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিনয়পন্থী মোর্চা নেতৃত্ব। অনীত বলেন, ‘‘বিমল গুরুং কেয়া চিজ় হ্যায় ও তো সভামেই পতা চলেগা। পাহাড়ের নেতা পাহাড় ছেড়ে সমতলে সভা করছেন।’’ তিনি এ দিন আরও বলেন, ‘‘গুরুং প্রতিশোধের মনোভাব নিয়ে আসতে চাইছেন। সেটা খারাপ। পাহাড়ে গোলমাল পাকাতে চাইছেন। আমরা তা হতে দেব না।’’
বিজেপির উত্তরবঙ্গের নেতা রথীন বসু বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে মোর্চার বলার কিছু নেই। আমরা কখনও মিথ্যে আশ্বাস দিইনি। মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁদের আলাদা রাজ্যের দাবি মেনে নিয়েছেন? সেটা তাঁরা স্পষ্ট করে জানান। মোর্চা থেকে পাহাড়ের মানুষ সরে গিয়েছে।’’