—ফাইল চিত্র
দলের কঠিন সময়ে হাত শক্ত করার বদলে উল্টে বিড়ম্বনা বাড়িয়ে গেলেন বিমল গুরুং।
শুক্রবার ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ির ডিপো পাড়া এলাকার ইউনিয়ন ক্লাবে খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের ডাকে মৈত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন বিমল গুরুং। সেখানে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ওদলাবাড়ির তৃনমূল নেত্রী তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মধুমিতা ঘোষ এবং পঞ্চায়েত সদস্য বাবু প্রধান। সেখানেই মোর্চার সমর্থনে স্থানীয় ধর্মযাজক তথা তৃণমূল নেতা সোনম লামার নাম মালবাজার বিধানসভার প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব করেন বিমল গুরুং। বিমল বলেন, “মালবাজার বিধানসভা আমি চিনি। তৃণমূল এখানে আমার সমর্থনে জিতবেই। সোনম আমার পছন্দের প্রার্থী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই প্রস্তাব করছি।”
সোনম লামাই এ দিনের মৈত্রী সম্মেলনের প্রধান আয়োজক। কার্যত তাঁর ডাকেই এ দিন বিমল ওদলাবাড়িতে আসেন। তফসিলি জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত মালবাজার বিধানসভা আসনে গতবারের বিজয়ী প্রার্থী বুলু চিক বরাইকের নাম এ বারেও টিকিটের জন্যে প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে সোনম লামার নামও তৃণমূলের তালিকায় আছে। স্থানীয় তৃণমূলের অনেকের ধারণা, নিজেকে বুলুর থেকে এগিয়ে রাখতেই গুরুংকে দিয়ে নিজের নাম প্রস্তাব করিয়ে দিলেন সোনম। যদিও সোনম বলেন, “প্রার্থী হওয়া নিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে আমি কোনও চেষ্টাই করছি না। বিমল গুরুং তাঁর ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন মাত্র।”
বিমল গুরুংয়ের এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুদ্ধ বুলু চিক বরাইকের ঘনিষ্ঠেরা। বুলু এ দিন বলেন, “কে প্রার্থী হবে, সেটা ঠিক করবেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিমল গত নির্বাচনেও ডুয়ার্সে বিজেপির হয়ে প্রচার করেছিলেন। তাই দলের হাইকমান্ডের উপরেই আমি আস্থা রাখতে চাই।” মালবাজারের টাউন তৃণমূল সভাপতি স্বপন সাহা নিজেও এ দিন বুলুর পক্ষেই সওয়াল করেন। তিনি বলেন, “বিমল যা-ই বলুন না কেন, দল আমার মতামত চাইলে আমি বুলুকেই ফের টিকিট দিতে অনুরোধ করব। বিমল গুরুং ডুয়ার্সে অবশ্যই তৃণমূলের হাত শক্ত করবেন। কিন্তু প্রার্থী কে হবেন, সেটা ঠিক করবেন নেত্রী।’’
ওদলাবাড়ি থেকে শুক্রবার বিকেলে নাগরাকাটা বিধানসভা কেন্দ্রের পাহাড়ি গ্রাম শিপচুতে যান বিমল। সেখানে সংগঠকদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। রবিবার নিজের খাসতালুক দার্জিলিঙে যাওয়ার কথা তাঁর। সেখানে জনসভা করারও কথা রয়েছে। এর মধ্যে কার্শিয়াংয়ে সভা করবেন বিনয় তামাংরা। দুই গোষ্ঠীর রেষারেষিতে পাহাড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। দু’পক্ষই দলের কর্মীদের সংযত থাকতে বলেছেন। কিন্তু উৎসাহের আতিশয্যে সেটা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক।