বিমল গুরুং৷ —ফাইল চিত্র।
তিন দিন ধরে দিল্লির যন্তরমন্তরে পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিতে ধর্নার পরেও, কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও স্তর বা বিজেপি নেতৃত্ব থেকে সৌজন্যের ডাকও পাননি বিমল গুরুং৷ দলীয় সূত্রের খবর, গত ৪ অগস্ট থেকে ধর্না শুরু হয়ে শেষ হলেও বিজেপি তো বটেই, অন্য কোনও দলের নেতৃত্বের সঙ্গে সরকারি ভাবে দেখা হয়নি মোর্চা নেতৃত্বের। এই অবস্থায় নতুন করে দলকে পাহাড় রাজনীতিতে কী ভাবে প্রাসঙ্গিক রাখা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন গুরুং। তাঁর সঙ্গে দিল্লিতে গিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। আপাতত তিনিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘কয়েক বছর আগেও গুরুং দিল্লি গেলেই বিভিন্ন স্তর থেকে ডাক পেতেন। পাহাড়ের পরিস্থিতি শোনা হত। ২০১৭ সাল থেকে সাড়ে তিন বছর তিনি দিল্লিতেই প্রভাবশালী-আশ্রয়েই ছিলেন। কিন্তু এ বার দিল্লি যেন অচেনা ঠেকল। কোনও রাজনৈতিক স্তর থেকে সৌজন্য বিনিময়ের জন্য ডাক মেলেনি।’’ দলের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সভাপতি পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করবেন বলে ওই নেতা জানিয়েছেন।
মোর্চা সূত্রের খবর, রাজধানী দিল্লিতে নারী মোর্চার তরফে ধর্নার আয়োজন হয়। সেখানে গুরুংয়ের স্ত্রী তথা নারী মোর্চার নেত্রী আশা গুরুংও ছিলেন। তিনি বক্তব্য রাখার সময় ‘রাজ্যের অন্দরে রাজ্য চাই’ বলে স্লোগান দেওয়ায় দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। একাংশ মনে করছেন, গুরুং স্ত্রীকে নারী মোর্চার কাজ দেখতে বলেও আদতে তাঁরা বাস্তব রাজনীতি থেকে দূরেই থাকছেন। সামনে এসে আন্দোলন করার ফল এ বার টের পাওয়া গিয়েছে। দলের অন্দরেও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে।
এই অবস্থায় পাহাড় রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য গুরুং পর পর কর্মসূচি নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে, পাহাড়ের বাইরে অন্য রাজ্যের গোর্খাদের এক জোট করে সামনের সারিতে থাকতে চাইছেন। আর ১৫ অগস্টের পরে, দিল্লি থেকে গোর্খাদের নিয়ে কোনও বার্তা না দেওয়া হলে তিনি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন বলেও জানিয়েছেন। তবে হামরো পার্টি, জিএনএলএফের মতো দলের থেকেও গুরুং পাহাড়ে পিছিয়ে পড়ায় দিল্লিতে তাঁর গুরুত্ব কিছুটা হলেও কমে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন।