এই বিডিও অফিসের জয়েন্ট বিডিওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। —নিজস্ব চিত্র।
স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাছ থেকে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠল জয়েন্ট বিডিওর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় মালদহের জেলা প্রশাসনিক মহল। কালিয়াচক-২ ব্লকের সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের কারণে অস্বস্তিতে জেলার প্রশাসনিক কর্তারাও। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন জয়েন্ট বিডিও দেবব্রত মণ্ডল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মহিলাদের স্বয়ম্ভর করার প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হয়। বিকল্প আয় এবং জীবিকার সন্ধানে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। কালিয়াচক-২ ব্লকে এমন একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কয়েকশো মহিলা যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে চালু হওয়া ওই শিবির আজও চলছে। কিন্তু প্রশিক্ষণ বাবদ যে অর্থ স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীদের প্রদান করার কথা তা এখনও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এ-ও অভিযোগ, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীদের কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য মহিলারা আবেদন করেন ব্লক প্রশাসনিক দফতরে। কিন্তু ওই মহিলাদের অভিযোগ, ‘‘কালিয়াচক-২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও দেবব্রতবাবু বকেয়া প্রাপ্ত টাকার ৫০ শতাংশ কাটমানি দাবি করেন। ওই টাকা তাঁকে না দিলে প্রাপ্ত বকেয়া টাকা দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি।’’
এর পরেই বিক্ষোভ শুরু করেছেন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। যদিও জয়েন্ট বিডিও দেবব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই মহিলাদের সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং অসত্য।’’ জয়েন্ট বিডিওর আরও দাবি, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ২৬ লক্ষ টাকার ভুয়ো বিল জমা করেন। তা জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরে জমা করা হয়। কিন্তু ভুয়ো বিলের জন্য তার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। জয়েন্ট বিডিও বলেন, ‘‘যদি কেউ এক টাকা তোলা নেওয়ার প্রমাণ দিয়ে থানায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তো করুক। তদন্ত হোক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এমন ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক দলের নেতারা রয়েছেন। এই কাজটি আনন্দধারা প্রকল্পের মাধ্যমেও করা হয়।’’
এমন একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক চাপানউতর তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ মালদহ বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘সরকারি প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। সরকারি আমলাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে গরিব মহিলাদের অর্থ লুট করেছেন শাসকদলের নেতারা।’’ যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার সহ-সভাপতি দুলালচন্দ্র সরকারের দাবি, ‘‘সরকারি টাকা নয়ছয় করলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেয়াত করেন না। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’