উদ্ধার হওয়া বাঁশের ইঁদুর। —নিজস্ব চিত্র।
বিরল প্রজাতির বাঁশের ইঁদুর উদ্ধার হল জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামে। আর তাকে সামলাতে কার্যত ঘুম উড়েছে বন দফতরের কর্মীদের। দিনভর বাঁশের ইঁদুরের কান্না সামলাতে গিয়ে বেগ পাচ্ছেন তাঁরা। তবে নদীর ধারে রাইজোমাইনি উপজাতির একমাত্র জীবিত প্রতিনিধিদের এক জনকে পেয়ে উত্তেজনাও কম নয়।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজগঞ্জ ব্লকের বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল সংলগ্ন পনাশগুড়ি গ্রামে একটি নদীর ধারে ইঁদুরের থেকে বৃহৎ আকারের প্রাণীটিকে দেখে আঁতকে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ, এই ইঁদুরের হাঁটা ঠিক উল্টো দিকে। তার উপর তার কান্না ঠিক মানবশিশুদের মতো। তাই বাঁশের ইঁদুর সম্পর্কে অবগত নন, এমন বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেন। খবর যায় বন দফতরে। তার পর আমবাড়ি রেঞ্জের বনকর্মীরা এসে বাঁশের ইঁদুরটিকে উদ্ধার করেছে।
বনকর্মীদের কথায়, ‘‘এদের অনুভূতি প্রবল। একদম বাচ্চাদের মতো কাঁদে। আর হাঁটাচলা একদম উল্টো। এ ভাবেই ওরা হাঁটে।’’ বন দফতরের তরফে জানা গিয়েছে, এই বিরল প্রজাতির ইঁদুর ‘ব্যাম্বু র্যাট’ নামে পরিচিত। মূলত দক্ষিণ-পূর্ব নেপাল থেকে দক্ষিণ চিন এবং মায়ানমার-সহ তাইল্যান্ড পর্যন্ত উচ্চভূমিতে বাঁশের বাগানে বাস করে এরা। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে প্রথম বাঁশের ইঁদুরের দেখা মিলল। আমবাড়ি রেঞ্জার আলমগীর হক বলেন, ‘‘এই প্রাণীটিকে এই অঞ্চলে প্রথম দেখা গেল। আমরা উপরমহলে জানিয়েছি গোটা বিষয়টি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মূলত বাঁশ বাগানে এরা থাকে। তৃণভোজী প্রাণী। বাঁশের কোরল খায়। আর এদের অনুভূতি প্রবল। বেশ কিছু আচার আচরণ মানুষের সঙ্গে মিলে যায়। ভয় পেয়েছে। তাই কাঁদছে সব সময়। তবে ওর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। সুস্থই আছে ও। আমরা আবার ওকে তার বিচরণ ক্ষেত্রে ছেড়ে দেব।’’