এই ঘড়িই এখন বিড়ম্বনার কারণ। — নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ডে নেমে ইদানীং সাধারণ মানুষের চোখ আটকে যাচ্ছে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে লাগানো পুরসভার পেল্লায় ঘড়িতে। ঘড়ির কাঁটা কখনও ফ্যানের ব্লেডের মত দ্রুতগতিতে বনবন করে ঘুরছে, আবার কখনও কাঁটা ঘুরছে উল্টো দিকে! সময় কী, তা ঠাহর করা সত্যিই মুশকিল।
চার মাস আগে বালুরঘাট পুরসভার তরফে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ন’লক্ষ টাকা ব্যয়ে লাগানো হয়েছিল এই ঘড়িটি। কিন্তু বিচিত্র তার স্বভাব! সময় না দেখে মানুষ এখন দেখেন কাঁটা কোন দিকে ঘুরছে? এর ফলে সময় দেখতে ভিড়মি খাওয়ার জোগাড় শহরবাসী-সহ পথচলতি মানুষের। এত টাকা ব্যয়ে লাগানো ঘড়ি চার মাস পেরোতে না পেরোতেই কী করে বিকল হয়ে পড়ে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও পুরসভার চেয়ারম্যান অশোককুমার মিত্র জানিয়েছেন, ঘড়ি বিকলের কথা জানতে পেরেই তা ঠিক করার কাজ শুরু হয়েছে। তাঁর দাবি, ঘড়িতে বিদ্যুতের সমস্যা হয়েছে।
বিগত বাম জমানায় বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ডের সামনে এই ঘড়িটি বসানোর জন্য খরচ হয়েছিল প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। মাসচারেক আগে নতুন করে আবার একটি স্তম্ভের উপর তা বসানো হয়। খরচ হয় ৯ লক্ষ টাকা। এর আগেও দীর্ঘ দিন ধরে ঘড়ি বিকল হয়ে পড়েছিল। অবশেষে বর্তমান পুরবোর্ড ঘড়িটি নতুন করে তৈরির উদ্যোগ নেয়। ঘড়ির পাশাপাশি বসানো হয় বিশ্ববাংলার লোগোও। কিন্তু সে সবই এখন অতীত। ঘড়িতে এখন দুরন্ত ঘূর্ণির টান!
বালুরঘাটের স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাতায়াতের পথে রোজই ঘড়িটা চোখে পড়ে। হঠাৎ এক দিন দেখি, ঘড়ির কাঁটা বনবন করে ঘুরছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে লাগানো ঘড়ি যদি বিকল হয়ে থাকে তা হলে বাইরের জেলা থেকে আসা মানুষের কাছে শহর সম্পর্কে ভুল বার্তা যায়। পুরসভার উচিত, দ্রুত ঘড়িটিকে মেরামত করানো।’’
আরএসপি নেত্রী তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুচেতা বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাম আমলে ঘড়িটি লাগানো হয়েছিল। তার পর দীর্ঘ দিন তা সঠিক সময় দেখিয়েছে। তৃণমূল জামানায় তার রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। সেই কারণেই ঘড়ি খারাপ হয়ে যায়। পুরনো ঘড়ি সারিয়ে তার খরচ দেখানো হয়েছে ন’লক্ষ টাকা। নতুন করে আবার ঘড়িটি খারাপ হয়েছে শুনেছি। পুরসভার উচিত দ্রুত ঘড়িটি সারিয়ে দেওয়া।’’
পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান অশোককুমার মিত্র বলছেন, ‘‘ঘড়ি খারাপ হওয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানানো হয়েছে। দ্রুত ঘড়িটি সারানো হবে। শুনেছি, সামান্য বৈদ্যুতিক সমস্যা হয়েছে। ঘড়িটি বসানোর জন্য যে খরচের কথা বলা হচ্ছে তাতে কোনও অসঙ্গতি নেই। শুধু ঘড়ি নয় ওখানে একটা সুদৃশ্য স্তম্ভও বানানো হয়েছে।’’