মিছিলে বার্তা ঐক্যের, তপ্ত দলের বৈঠক

লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ি আসনটি হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। সেই হারানো জমি পুনরুদ্ধার করার বার্তা দিতেই বিজেপিকে ধিক্কার দিয়ে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে মিছিল করল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

পথে: দলের পতাকা হাতে ময়নাগুড়িতে তৃণমূলের মিছিলে অরূপ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ি আসনটি হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। সেই হারানো জমি পুনরুদ্ধার করার বার্তা দিতেই বিজেপিকে ধিক্কার দিয়ে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে মিছিল করল তৃণমূল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে ওই মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়। অরূপ নিজে মিছিলের সামনে থেকে কাঁধে দলের পতাকা নিয়ে হাঁটেন। তাঁর এক পাশে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী ও অন্য পাশে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়, প্রবীণ নেতা কৃষ্ণকুমার কল্যাণী, বিজয়চন্দ্র বর্মণদের রেখে দলের ঐক্যের ছবিও জনসমক্ষে তুলে ধরেছিলেন অরূপ। তবে মিছিলের আগে বৈঠকে অবশ্য দলের নানা স্তরের নেতার ক্ষোভের কথা শুনতে হয় অরূপকে।

লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই উত্তপ্ত ময়নাগুড়ি। জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের পার্টি অফিস ‘দখল করা’ শুরু হয় ময়নাগুড়ি থেকেই। কিছুদিন আগে জেলা সভাপতি সৌরভের গাড়িতেও ঢিল পড়ে মনাগুড়িতেই। তৃণমূল সূত্রে খবর, ব্লকের নেতারা ময়নাগুড়ির বিভিন্ন গ্রামে ঢুকতে ‘ভয় পাওয়া’র কথা জানান জেলা নেতাদের। পাল্টা বার্তা দিতেই এ দিন তৃণমূল ময়নাগুড়িতে মিছিল করেছে বলে দল সূত্রে খবর। এ দিন ময়নাগুড়ি শহরের এ মাথা থেকে ও মাথা ঘোরে মিছিলটি। মিছিলের জনসমাগম দেখে খুশি দলীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

মিছিলের আগে ময়নাগুড়ির বাইপাসে একটি হোটেলে দলের বৈঠক হয়। সেখানে অবশ্য দলের অনেক নেতার ক্ষোভের কথা শুনতে হয় অরূপকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রথমে ঠিক হয়েছিল ময়নাগুড়ির ধর্মশালায় বৈঠক হবে। কিন্তু এক বিধায়ক-সহ কয়েকজন নেতা প্রশ্ন তোলেন, দলের বৈঠক কেন হোটেলের বাতানুকুল ঘরে হবে। তা নিয়ে কিছুক্ষণ শোরগোল হয়। বৈঠকে শুধু মূল ও শাখা সংগঠনগুলির ব্লক সভাপতিদের ডাকা হয়েছিল। তা নিয়ে অন্য পদাধিকারীরা ক্ষোভ জানাতে শুরু করেন। সকলের কথা শুনতে হবে বলে দাবি ওঠে। বিক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পুলিশ দিয়ে কর্মীদের সরিয়ে দিতে হয়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, বাইরে যখন বিক্ষোভ শান্ত হয় তখন বৈঠকে তুমুল চেঁচামেচি শুরু হয়। যাঁরা নালিশ জানান, তাঁদের কেউ দল বা শাখা সংগঠনের ব্লক সভাপতি কেউ আবার বিধায়কও। দল সূত্রে খবর, বৈঠকে কেউ অভিযোগ করেন, কদাচিত জেলা নেতারা ব্লকে এলেও ঘনঘন ঘড়ি দেখতে থাকেন। সংক্ষেপে নিজের বক্তৃতা দিয়ে ফিরে যান। কর্মীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনাই হয় না। কেউ বলেন, “নেতাদের লাল-নীল বাতি খুলে দিন!” এক ব্লক সভাপতি বলেন, “আপনাকেই দাদা (অরূপ) ব্লকে ব্লকে যেতে হবে, না হলে কর্মী-সমর্থকদের ফেরানো যাবে না।” ধৈর্য ধরে সকলের কথা শোনেন অরূপ।

মিছিলের শেষে অরূপ বিক্ষোভের কথা স্বীকার করলেও দাবি করেন, সেই বিক্ষোভ বিজেপির বিরুদ্ধে ছিল। অরূপ বলেন, “কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। সেই ক্ষোভ বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement