মর্টার শেল বিস্ফোরণের সেই মুহূর্ত। ছবি: সংগৃহীত।
তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে আসা মর্টার শেলের বিস্ফোরণে বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে মৃত্যু হয় দুই শিশুর। গুরুতর জখম হন ছ’জন। এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসল সেনা এবং প্রশাসন। সিকিমের দুর্যোগে ভেসে যাওয়া সামরিক ছাউনির বিস্ফোরক উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করতে তৎপর সেনা। তিস্তার উপকূলে যেখানেই মর্টার শেল বা ওই জাতীয় বিস্ফোরক উদ্ধার করা হচ্ছে, তা সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, সেনা এবং জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। তিস্তা সংলগ্ন এলাকায় বিস্ফোরক বা বন্দুক দেখতে পেলে অবিলম্বে তা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরক, আগ্নেয়াস্ত্র এবং সন্দেহজনক কোনও প্যাকেট বা বাক্স দেখতে পেলে কৌতূহলের বশে কোনও ভাবেই সেগুলিতে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের কোনও বিস্ফোরক বা আগ্নেয়াস্ত্র পেলে অবিলম্বে থানাতে খবর দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের তরফে।
মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং দক্ষিণ লোনক লেক উপচে বিপুল জলের স্রোতে বিপর্যস্ত সিকিম। বুধবার সারা দিন জুড়ে সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তিস্তা। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ঘরবাড়ি, আস্ত সেনাছাউনি। সেই রকমই কোনও সেনাছাউনি থেকে মর্টার শেল ভেসে এসেছিল বৃহস্পতিবার। যেগুলি ফেটে যাওয়ায় বিপত্তি হয় বলে মনে করছেন জেলা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে জলপাইগুড়ি জেলার মাল মহকুমার ক্রান্তি ব্লকের চাঁপাডাঙায় ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে খবর, হড়পা বানে সেনাছাউনির মর্টার শেল ভেসে এসেছিল তিস্তার নিম্ন অববাহিকায়। এলাকার একটি ছেলে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে খেলনা ভেবে সেটি বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। সেটি পরিষ্কার করে খেলাধুলো করার সময় বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই শিশুর। আহত হয়েছেন ছ’জন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।