যাদবপুরের ঘটনার নিন্দা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রছাত্রী শিক্ষকদের প্রতিবাদ মিছিল। ছবিঃ বিনোদ দাস।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রচারে হাঁটলেন পড়ুয়া এবং কর্তৃপক্ষের একাংশ। তবে সম্প্রতি এখানেও র্যাগিং নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত চলছে। তবে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এখনও নানা ফাঁকফোকর রয়েছে বলে অভিযোগ।
নতুন শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়া ভর্তি চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশ মেনে, নতুন পড়ুয়াদের জন্য আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করার কথা জানানো হয়েছে। যদিও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে সেই ব্যবস্থা কার্যত নেই বলে অভিযোগ ডিএসও-র মতো বিরোধী ছাত্র সংগঠনের। তবে একই হস্টেলে আলাদা ভাবে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। অভিযোগ, পাশ করে যাওয়া সিনিয়র ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ থাকছেন হস্টেলে। তবে কর্তৃপক্ষই জানিয়েছেন, ঠিক র্যাগিংয়ের অভিযোগ না-হলেও হস্টেলে অভব্য আচরণের অভিযোগে ছ’জন পড়ুয়াকে হস্টেল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে পুরোপুরি র্যাগিং রুখতে কর্তৃপক্ষ কতটা সফল তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এ ধরনের অভিযোগ চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন কিন্তু পড়ুয়া বা প্রাক্তন পড়ুয়াদের অনেকের মধ্যে রয়েছে।
হস্টেল সুপারিন্টেন্ডেন্টরা হস্টেলে সব ক্ষেত্রে থাকেন না বলেও অভিযোগ। এ দিন র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে প্রচারে হেঁটেছেন অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির সদস্য তথা ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত, সহকারী ডিন জগদীশ বিশ্বাসেরা। ডিন বলেন, ‘‘এখানে নিয়মমাফিক অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি, অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াড রয়েছে। নিয়মিত তারা নজরদারি চালায়। বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’একটি ঘটনা ঘটলেও, তদন্ত করে তেমন কিছু মেলেনি। যাদবপুরে যে ঘটনা ঘটেছে আমরা সকলেই তার তীব্র নিন্দা করছি।’’ তাঁদের দাবি, সিনিয়র ও জুনিয়র পড়ুয়াদের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক থাকুক সেটাই তাঁরা চান। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে সেটা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এক জন সুপার হস্টেলেই থাকেন। বাকিরা ক্যাম্পাসেই থাকেন।
র্যাগিং নিয়ে সম্প্রতি এক ছাত্রী কেন্দ্রীয় অ্যান্টি-র্যাগিং সেলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্ট সেলে জানানো হয়েছে। ডিন জানান, তদন্তের কাজ চলছে বলে এখনই তা নিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
প্রাক্তন ছাত্র তথা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসক শাহরিয়ার আলম ডিএসও-র উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক। তাঁর দাবি, ‘‘শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের যে পড়ুয়ারা মিছিলের আয়োজনের দায়িত্বে, বাস্তবে তাঁদের একাশংই র্যাগিং করেন। যাদবপুরের ঘটনার পরে আমরা র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পোস্টার দিয়েছিলাম। তা ছিঁড়ে ফেলাহয়েছে। যারা ছিঁড়েছেন, তাঁরা কি র্যাগিং চান?’’ টিএমসিপি জেলা সভাপতি তনয় তালুকদার পাল্টা বলেন, ‘‘আমাদের ছাত্রছাত্রীরা সর্বত্রই র্যাগিয়ের বিরুদ্ধে সক্রিয়। ডিএসও-র কথার কোনও ভিত্তি নেই,গুরুত্বও নেই।’’