সম্পর্কের টানাপড়েনেই খুনের চেষ্টা! পথের কাঁটা সরাতেই তরুণীকে লক্ষ্য করে গুলি

কুশলের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী আগেই একটি মামলা করেছেন। সেই মামলারও অন্যতম সাক্ষী ওই তরুণী।

Advertisement

অভিজিৎ পাল 

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯ ০৪:৪৫
Share:

সেই তরুণী।—নিজস্ব চিত্র।

দিনে দুপুরে শহরের মধ্যে এক তরুণীকে লক্ষ করে গুলি চালানোর ঘটনায় ইসলামপুরের এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁর নাম কুশল দাস। বুধবার দুপুরে গুলি চলার পরপরই তাঁকে আটক করা হয়েছিল। পুলিশের দাবি, ওই তরুণী কুশলের কাছেই চাকরি করতেন। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কও ছিল। সেই সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছে। তার পরেই দুষ্কৃতীদের ভাড়া করে ওই তরুণীকে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি।

Advertisement

ওই তরুণীও পুলিশের কাছে একই অভিযোগ করেছেন। তার পরে পুলিশ কুশল ও তাঁর সহকারী সঞ্জয় সাঁতরাকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ইসলামপুরের অতিরিক্ত মুখ্য ও দায়রা আদালতে তোলা হলে কুশলকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত ও সঞ্জয় সাঁতরাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার পক্ষের আইনজীবী সঞ্জয় ভাওয়াল জানান, কুশল ও সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭, ১২০ (বি), ২৫, ২৭ অস্ত্রধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশের দাবি, সঞ্জয় স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ওই তরুণীকে খুন করতে তাঁরাই দুষ্কৃতী ভাড়া করেছিলেন। তবে কুশল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।

কুশলের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী আগেই একটি মামলা করেছেন। সেই মামলারও অন্যতম সাক্ষী ওই তরুণী। বুধবার দুপুরে শহরের একটি স্কুল ও হাসপাতালের মধ্যের রাস্তা দিয়ে সেই মামলায় সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। তখনই পিছন থেকে মোটর বাইক করে দু’জন দুষ্কৃতী তাঁদের ধাওয়া করে। বাইকের পিছনে বসেছিল যে দুষ্কৃতী, সে পরপর তিনটি গুলি চালায়। তবে ওই তরুণী ও তাঁর ভাইয়ের গায়ে কোনও গুলি লাগেনি।

Advertisement

অকুস্থল: হাসপাতালের পিছনে স্কুলের পাশের রাস্তা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানালেন, এই গলিতেই গুলি করা হয় ওই তরুণীকে।— নিজস্ব চিত্র

ঘটনার পরে শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ তদন্তে নামে। তখনই ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তার পরে সে দিন বিকেলেই আটক করা হয় কুশলকে। কুশল নিজের অপরাধ অস্বীকার করলেও তাঁর দাবি, ওই যুবতী তাঁকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন। কিছু অন্তরঙ্গ ছবির জন্য তাঁর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছিল। ওই তরুণী পাল্টা দাবি করেছেন, বিয়ের জন্য বারবার তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন কুশল। এমনকি সে জন্য ৫০ লক্ষ টাকা কুশল তাঁকে দিতেও চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি রাজি হননি। তাঁর দাবি, সেই কারণেই তাঁর উপরে হামলা হল।

পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের তাঁকে চিনিয়ে দিতে সহযোগিতা করেছিলেন সঞ্জয়। ঘটনার আগে সঞ্জয়কে ওই যুবতীর বাড়ির আশেপাশে দেখাও গিয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর পরই সঞ্জয়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে সঞ্জয় ভেঙে পড়েন। তার পরেই সব স্বীকার করে নেন।

দুষ্কৃতীদের দলটিকে শনাক্তও করেছে পুলিশ। তাদের এক জনকে আটক করা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর। তবে এই ব্যাপারে পুলিশ এখন কোনও কথা বলতে চাইছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement