সিকিমের নাকু লা-য় ভারত ও চিনে সেনার সংঘর্ষ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আজ, মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে চিনের আগ্রাসী মনোভাবে উদ্বেগ বেড়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। সরকারি সূত্রের খবর, ২০ জানুয়ারি সিকিমের নাকু লা সীমান্তে চিন ও ভারতীয় সেনার মুখোমুখি সংর্ঘষের পর মন্ত্রক উত্তর লাগোয়া চিন সীমান্ত তো বটেই, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্ত ঘিরেও সতর্কতা জারি করেছে। সেনা, বিএসএফ, এসএসবি ছাড়াও নজরদারিতে রয়েছে বায়ুসেনা। গত কয়েক দিন ধরে সিকিম, উত্তরবঙ্গ, উত্তর-পূর্বের আকাশে বায়ুসেনার নজরদারি বেড়েছে। কোচবিহার থেকে দার্জিলিং— বিস্তীর্ণ এই এলাকায় নজরদারির জন্য রাজ্য পুলিশও সক্রিয়তা বাড়িয়েছে। এর মধ্যে উলফার তরফে প্রজাতন্ত্র দিবস বয়কটের কথা বলায় নমনি অসম লাগোয়া উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বাড়তি নজর দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে সীমান্ত লাগোয়া সর্বত্র বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। কিন্তু এ বারে চিন সীমান্তের নাকু লা-র পরিস্থিতি চিন্তা বাড়িয়েছে। গোলমাল বা এই অঞ্চলকে অস্থির করার চক্রান্ত সব সময় থাকে।’’
উত্তরবঙ্গকে ঘিরে রয়েছে চিন, নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভুটান সীমান্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে সংবেদনশীল এখন চিন সীমান্ত। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর থেকে নাথু লা সীমান্ত বন্ধ ছিল। ২০০৬ সালে দু’দেশের সরকার তা চালু করে। ১৯৬৭ সালে নাথু লাতেই দুই দেশের যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে। সে বার দু’পক্ষের লড়াইয়ে শতাধিক চিনা জওয়ান মারাও গিয়েছিলেন।
গত এক বছরে নানাভাবে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও সীমান্ত নিয়ে টানাপড়েন চলেছে। ভুটানে সেচ খাল আর নেপালে সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের দখলদারি দিল্লিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এর পিছনে চিনের মদতের অভিযোগও মাঝেমধ্যে উঠে আসে। শিলিগুড়ির ‘চিকেন্স নেক’কে ঘিরে বাইরের নানা শক্তি যে সব সময় সক্রিয়, তা সরকারি রিপোর্টে বারবার সামনে এসেছে। নাকু লা, ডোকালাম, নাথু লা-য় চিনের আগ্রাসী মনোভাব, অন্য সীমান্তে ‘বাইরের’ শক্তির মদতে অস্থিরতা তৈরি রুখতে সমস্ত বাহিনীকে কেন্দ্র থেকে সজাগ ও সতর্ক করা হয়েছে।
সেনার সুকনা সদর দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সিকিম সীমান্তে সুযোগ পেলেই ঘাঁটি, বাঙ্কার বা রাস্তা তৈরি করার চেষ্টা করে চিন। অভিযোগ, নেপালকেও এরা মদত দিচ্ছে। তেমনিই রয়েছে ভুটানেও। তাই ভারতকে বেশি সতর্ক হতে হচ্ছে।’’