—প্রতীকী ছবি।
ব্যালটপত্র ছাপা এবং পরীক্ষার কাজের পরে ‘ইডি ভোট’ (ইলেকশন ডিউটি ভোট), অর্থাৎ, ভোটের কাজে যুক্তদের ভোটগ্রহণের দায়িত্বও দেওয়া হচ্ছে অস্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের, এমনই অভিযোগ জলপাইগুড়িতে। জলপাইগুড়ির জেলার বিভিন্ন ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের ব্যালটপত্র ছাপা হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ‘ইডি ভোট’ নেওয়ার প্রশিক্ষণ। এই দুই কাজেই রাখা হয়েছে চুক্তিভিত্তিক এবং অস্থায়ী কর্মীদের। যদিও হাই কোর্টের নির্দেশ— ভোটের কাজে চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী কর্মী ব্যবহার করা যাবে না।
তার পরেও কেন এই কর্মীদের ভোটের কাজে নেওয়া হচ্ছে? জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের থেকে মূলত তিনটি ব্যাখ্যা মিলেছে। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, হাই কোর্টের নির্দেশে ভোটগ্রহণের কাজে অস্থায়ী কর্মী বা চুত্তিভিত্তিক কর্মীদের নিতে বারণ করা হয়েছে। সে নির্দেশ মেনে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাওয়া কর্মীদের তালিকা থেকে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের শুধুমাত্র তদারকির ভার দেওয়া হয়েছে। যেমন, ব্যালটপত্র বোঝাই ট্রাঙ্ক সরানো বা গাড়িতে ঠিকঠাক সব কিছু ওঠানো হচ্ছে কি না, তা নজর রাখা। দাবি, এগুলি সরাসরি ভোট সংক্রান্ত কাজ নয়। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ‘ইডি ভোট’ নেওয়ার প্রক্রিয়ায় কেন চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের রাখা হল? আর এক ব্যাখ্যা কর্মী-সঙ্কটের। গ্রাম পঞ্চায়েত বা ব্লক অফিসে পর্যাপ্ত স্থায়ী কর্মীর অভাব থাকায় ওই কর্মীদের সহায়তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি প্রশাসন সূত্রের।
এ বিষয়ে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন এবং হাই কোর্টের নির্দেশ মান্য করেই কাজ চলছে। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
প্রশাসনের ভোটের কাজ বিলিবন্টন করার নির্দেশে গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে। ‘জিআরএস’, ‘এসটিপি’, ‘ভিএলই’-র মতো পদগুলি সবই চুক্তিভিত্তিক এবং এঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পীযূষ মিশ্র বলেন, “ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। পুরসভা-সহ কয়েকটি দফতরের বহু স্থায়ী কর্মীকে ভোটের কাজ না দিয়ে অস্থায়ীদের কাজ দেওয়া হচ্ছে। কারণ, তাঁদের চাপ দিয়ে অনেক কিছুই করানো যায়। এই প্রথম কোনও পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে, যার কোনও পূর্বপরিকল্পনা নেই।’’ জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় বলেন, “হেরে যাওয়ার ভয়ে আগেই সাফাই গাইছেন বিরোধীরা।’’