কোমরের নীচে গুলি লেগেছে বাইরুলের। নিজস্ব চিত্র।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হলেন দুই ভাই। বৃহস্পতিবার ভোরে ৩টে নাগাদ মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার শোভাপুর সীমান্তের এই ঘটনা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে বিএসএফ এবং আহতদের পরিবারের মধ্যে। বিএসএফের দাবি, চোরাচালান রুখতে শূন্যে দু’রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে। যদিও গুলিতে আহত হওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ বিএসএফ। এ দিকে, বিএসএফের গুলিতেই দুই ভাই আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ পরিবারের। যদিও লিখিত অভিযোগ করেননি তাঁরা। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আহতেরা হলেন টুটুল শেখ ও বাইরুল শেখ। টুটুল ট্রাক্টরের চালকের কাজ করেন। বাইরুল নিজেদেরই মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। বৈষ্ণবনগরের শোভাপুর সীমান্ত এলাকায় তাঁদের বাড়ি। দুই ভাই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন মালদহ মেডিক্যালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, টুটুলের ডান হাতে এবং বাইরুলের কোমরের নীচের অংশে গুলি লেগেছে। অস্ত্রোপচার করে গুলি বার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, বিএসএফ পাচারকারী সন্দেহে তাঁদের ছেলেদের উপরে গুলি চালিয়েছে। আহতের বাবা মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, “গ্রামের মধ্যেই আমার মিষ্টির দোকান রয়েছে। রাতে দোকানেই ছিলাম। ছেলেরা ঘরে ঘুমিয়েছিল। গ্রামে হইচই শুনে বাড়ি থেকে বার হয়। সেই সময় বিএসএফ পাচারকারী সন্দেহে ছেলেদের উপরে গুলি চালায়।” আহতদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় থানায় অভিযোগ জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ দিকে, শোভাপুর সীমান্তের কিছু এলাকায় এখনও কাঁটাতার নেই। সেই সুযোগে সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান চলে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ফেনসিডিল, জালনোটের কারবারে অন্যতম করিডর শোভাপুর সীমান্ত।
হাতে আঘাত লাগে টুটুলের। নিজস্ব চিত্র।
এ দিন সীমান্তে টহলদারি চালাচ্ছিলেন বিএসএফের ৭৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানেরা। বিএসএফের দাবি, বড় ঘাস রয়েছে সীমান্তে। সেই সুযোগে প্রায় ২০ জনের একটি দল পাচারের চেষ্টা চালায়। বাধা দিতে গেলে জওয়ানদের উপরেও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে দু’রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে দাবি বিএসএফের। যদিও কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, সে কথা অস্বীকার করেছেন বিএসএফের কর্তারা।
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ শাখার এক কর্তা বলেন, “পরিস্থিতি সামাল দিতে জওয়ানেরা গুলি চালিয়েছে ঠিকই। তবে আমাদের গুলিতে আহত হওয়ার কোনও খবর নেই। থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।” এ দিনই সীমান্ত থেকে ১৪৫টি ফেনসিডিল উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”