প্রতীকী ছবি।
শিলিগুড়ি মহিলা আইটিআই কলেজের এক মহিলা ইন্সট্রাক্টরকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ওই কলেজের পূর্বতন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। গত ডিসেম্বরে উঠেছে ওই অভিযোগ। তারপরেই তড়িঘড়ি শিলিগুড়ির ওই অধ্যক্ষকে কোচবিহার আইটিআই কলেজে বদলি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্তও। যদিও, কলেজ কর্তৃপক্ষ বা তদন্তকারীরা বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। অভিযুক্ত ওই অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। বুধবার শিলিগুড়ির আইটিআই আঞ্চলিক অফিসে ওই মহিলার অভিযোগ নিয়ে একটি শুনানি করে তদন্ত কমিটি।
কারিগরি শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি মহিলা আইটিআই কলেজে দীর্ঘ দিন অস্থায়ীভাবে কাজ করছেন এই ইন্সট্রাক্টর। তৎকালীন অধ্যক্ষ মলয়কুমার সাহা শিলিগুড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই ইন্সট্রাক্টরের অভিযোগ, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে তাঁকে নানাভাবে উত্যক্ত করতেন অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়া এবং ভাড়া বাড়িতে ডেকে পাঠানোর অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা। এমনকী কলেজে নানা অছিলায় তাঁকে অধ্যক্ষ চেম্বারে ডেকে পাঠাতেন বলেও অভিযোগ। ওই মহিলা ইন্সট্রাক্টর অভিযোগ করেছেন যে, আপত্তিকর প্রস্তাব না মানায় অধ্যক্ষ তাঁকে টাকার লোভ দেখিয়েছিলেন।
গত ডিসেম্বরে তিনি তৎকালীন অধ্যক্ষ মলয়কুমার সাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে পদস্থ কর্তাদের কাছে আবেদন করেছিলেন। তারপর কলকাতার কারিগরি ভবন থেকে একটি ‘ইন্টারনাল কমপ্লেনস কমিটি’ তৈরি হয়। বুধবার সেবক রোডের দুই মাইল এলাকায় সেই কমিটির সদস্যরা ঘটনার শুনানি করেন। শিলিগুড়ি আইটিআই আঞ্চলিক দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘মহিলা ইন্সট্রাক্টর বিস্তারিতভাবে বিষয়গুলি কমিটির সামনে বলেছেন। কেবল অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তই নন, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে কয়েকজন আইটিআই কর্মীর সঙ্গেও কথা বলেন কমিটির সদস্যরা।’’ সূত্রের দাবি, রিপোর্ট জমা করে সেগুলি পাঠানো হবে কারিগরি ভবনেই। শিলিগুড়ি আইটিআই কলেজে এরকম ঘটনার অভিযোগ এর আগে নেই বলেই দাবি করছেন কর্তারা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠলে তা ‘বিশাখা গাইডলাইন’ মেনে তৈরি কমিটিকে দিয়েই তদন্ত করানোর রীতি রয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
এ দিন শুনানির পরে ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছিলাম। আমি বাইরে এ বিষয়ে কিছু বলব না।’’ অধ্যক্ষ মলয়কুমার সাহাকে ফোন করা হলে আনন্দবাজার শুনেই ফোন কেটে দেন। পরে তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায়।