Fake Passport

পাসপোর্ট-কাণ্ডের রহস্য খুলতে নজরে আরও পুলিশকর্মী এবং হোমগার্ড

ধৃতদের জেরা করে চক্রের জাল খুলতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তবে এই জাল যে বিস্তৃত বহু দূর, তা নিয়ে নিশ্চিত লালবাজার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৯
Share:

পাসপোর্ট কাণ্ডে তদন্তকারীদের নজরে আছেন আরও কয়েক জন পুলিশকর্মী। —প্রতীকী চিত্র।

ধৃত প্রাক্তন পুলিশকর্মীই শুধু নন, পাসপোর্ট কাণ্ডে তদন্তকারীদের নজরে আছেন আরও কয়েক জন পুলিশকর্মী। যাঁরা মূলত বিভিন্ন থানা এলাকায় পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ের কাজ করতেন। এক জন হোমগার্ডও তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন বলে লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের ভূমিকা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ধৃতদের জেরা করে চক্রের জাল খুলতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তবে এই জাল যে বিস্তৃত বহু দূর, তা নিয়ে নিশ্চিত লালবাজার।

Advertisement

ভুয়ো পাসপোর্ট কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সাব-ইনস্পেক্টর আব্দুল হাইকে শুক্রবার তাঁর অশোকনগরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। বছরখানেক আগে কলকাতা পুলিশ থেকে অবসর নেন আব্দুল। এই সাব-ইনস্পেক্টর সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশনে (এসসিও) ২০১৯ থেকে ২০২৩-এর অক্টোবর পর্যন্ত পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়েই টাকার বিনিময়ে চক্রীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি ভুয়ো পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করেছিলেন বলে অভিযোগ। আব্দুলকে জেরা করে এবং তাঁর ব্যাঙ্কের নথি দেখে কয়েক লক্ষ টাকা লেনদেনের হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পাসপোর্ট কাণ্ডে আগেই ধৃত সমরেশ বিশ্বাস, মনোজ গুপ্ত-সহ একাধিক জনের অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক দফায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছিল আব্দুলকে। গত দু’বছরে এই টাকার লেনদেন হয়। এ ছাড়াও কয়েক লক্ষ টাকা নগদে লেনদেন হয়েছিল বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ জানতে পেরেছে, গত কয়েক বছরে ১৫০টির বেশি ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করেছিলেন মনোজ এবং তাঁর সঙ্গীরা। এর মধ্যে ৫১টি পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করেছিলেন আব্দুল। জানা গিয়েছে, পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে জোড় তারিখে সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশনের আধিকারিকেরা দায়িত্বে থাকতেন। বিজোড় তারিখে দায়িত্বে থাকতেন স্থানীয় থানার আধিকারিক। সমরেশ এবং মনোজেরা ইচ্ছাকৃত ভাবেই জোড় তারিখ, অর্থাৎ যে দিন আব্দুল দায়িত্বে থাকতেন, সেই দিনগুলিতেই তথ্য যাচাইয়ের তারিখ ফেলতেন।

Advertisement

৫১টি পাসপোর্ট বাদে বাকিগুলির তথ্য কারা যাচাই করেছিলেন, তা এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ফলে এই চক্রে পুলিশের আরও কর্মী যুক্ত থাকার আশঙ্কা বাড়ছে। ইতিমধ্যে কয়েক জন পুলিশকর্মীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পুলিশকর্তাদের মনে। বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে লালবাজার। কয়েক জনের ক্ষেত্রে নিজের থানা এলাকা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী থানা এলাকার পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ের বিষয়টিও নজরে এসেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের এক হোমগার্ডের ভূমিকাও।

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘হেফাজতে থাকা ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। আর কারা যুক্ত, তা দেখা হচ্ছে। কোনও পুলিশকর্মী যুক্ত থাকলে, তাঁদেরকেও ছাড়া হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement