Purulia Tourism

হাতেগোনা ট্রেন, সমস্যায় জেলার পর্যটন

প্রশাসন সূত্রে খবর, বছরে গড়ে ছ’লক্ষের বেশি পর্যটক আসেন জেলায়। গত ডিসেম্বরে এসেছেন পৌনে দু’লক্ষ জন।

Advertisement

প্রশান্ত পাল 

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৪
Share:

পুরুলিয়া স্টেশন। —ফাইল চিত্র।

মরসুমী পর্যটন নয়। পাহাড়-জঙ্গলের টানে কম-বেশি সারা বছরই এখন ভ্রমণপিপাসুদের গন্তব্য হয়ে উঠেছে পুরুলিয়া। জেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে পরিকাঠামোর বিকাশ-সহ আনুষঙ্গিক নানা পদক্ষেপও করা হয়েছে। তবে বদলায়নি হাতেগোনা কয়েকটি ট্রেন-নির্ভর পুরুলিয়ায় পৌঁছনোর যোগাযোগ ব্যবস্থা।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, বছরে গড়ে ছ’লক্ষের বেশি পর্যটক আসেন জেলায়। গত ডিসেম্বরে এসেছেন পৌনে দু’লক্ষ জন। জেলা হোটেল-লজ অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র মোহিত লাটা বলেন, “পর্যটক বাড়লেও সেই অনুপাতে পুরুলিয়ায় আসার ট্রেন কই! শিয়ালদহ থেকে সরাসরি পুরুলিয়ায় আসার কোনও ট্রেন নেই। হাতেগোনা ট্রেন যা রয়েছে, সব হাওড়া থেকে। অনেকে ইচ্ছা থাকলেও আসতে পারেন না বলে আক্ষেপ করেন।” রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভিন্ রাজ্য থেকেও এখন পর্যটকেরা আসছেন। সব দিক বিবেচনা করে আরও ট্রেন বাড়ানো দরকার বলে জানান তিনি।

বর্ষশেষের ছুটিতে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে অযোধ্যা পাহাড়ে বেড়াতে আসা হারাধন সরকার, কল্যাণ দাসেরা জানাচ্ছিলেন, এ সময়ে জেলায় আসার ট্রেনে ‘রিজার্ভেশন’ মেলে না। দেড় মাস আগে বন্দে ভারতের টিকিট কাটেন। তাঁদের কথায়, “ওই ট্রেনে পুরুলিয়া হয়ে পাহাড়ে পৌঁছতে রাত সাড়ে ১০টা বেজে গিয়েছিল। রাতে হোটেলে পৌঁছে পর দিন থেকে ঘুরলাম। কিন্তু রাতের হোটেল ভাড়া দিতে হয়েছে। সময়ে পৌঁছনোর ট্রেন মিললে দিনটা নষ্ট হত না।” ভোরে সাঁতরাগাছি থেকে রূপসী বাংলায় পুরুলিয়া পৌঁছনোর হ্যাপা অনেক, জানান কলকাতার সন্তোষপুরের আয়ুষী ধাড়াও।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে নানা তরফে ট্রেনের সংখ্যা বৃ্দ্ধির দাবি উঠছে। পুরুলিয়া থেকে হাওড়া ও শিয়ালদহ পর্যন্ত নতুন ট্রেনের দাবিতে সম্প্রতি পুরুলিয়া নাগরিক মঞ্চের তরফে রেলের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ‘রেলওয়ে ইউজার্স অর্গানাইজেশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক দেবু চক্রবর্তী বলেন, “গত বছর থেকে রাঁচী-হাওড়া রুটে একটি বন্দে ভারত পুরুলিয়া হয়ে চলাচল করছে। আদ্রা-বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর হয়ে আরও একটি বন্দে ভারত চালু করা দরকার। আসানসোল, ধানবাদ বা রাঁচী থেকে বোকারো হয়ে যে রুটে ইন্টারসিটি চলে, সেই রুটে ট্রেনটি দেওয়া যেতে পারে।” পাশাপাশি, হাওড়া থেকে ভায়া বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া ও আদ্রা রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো এবং পুরুলিয়া থেকে মশাগ্রাম হয়ে হাওড়া পর্যন্ত ট্রেন চালানোর দাবি উঠছে।

পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “পর্যটকদের বেশির ভাগ কলকাতার দিক থেকে বা কলকাতা ছুঁয়ে পুরুলিয়ায় আসেন। কিন্তু যে হারে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে, সেই তুলনায় ট্রেন অত্যন্ত কম। আগে হাওড়া থেকে পুরুলিয়া রাঙামাটি ও খড়্গপুর-পুরুলিয়া ইন্টারসিটি চলত। করোনার সময় থেকে তা বন্ধ। ট্রেনগুলি চালুর ব্যবস্থা হোক।”

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চারণ জানান, বিভিন্ন তরফে বন্দে ভারত-সহ নতুন ট্রেনের যে দাবি উঠেছে, তা নিশ্চয় রেল বোর্ডের কাছে পৌঁছবে। কোন রুটে নতুন ট্রেন চলবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement