আন্দোলন: রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
এক সময় তিনিই ছিলেন কোচবিহারের এক রকম শেষ কথা। দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতিও। তাঁর রাগের ভয় কাঁপতেন জেলার অনেক তৃণমূল কর্মীই। বিধানসভা নির্বাচনের সময় দলেরই এক কর্মীকে তিনি চড় পর্যন্ত কষিয়ে দেন। সেই কর্মীও আর কোথাও কোনও অভিযোগ করেননি। সরকারি দফতরে ঢুকেও তিনি রাগারাগি করেছেন, এমন নজিরও দেখাতে পারেন দলের কর্মীরা। সেই দাপুটে নেতা রবিবাবুর বাড়ির অদূরেই সোমবার বিক্ষোভ দেখাল জমি রক্ষা কমিটি নামে একটি সংগঠন। রবিবাবু অবশ্য তখন বাড়িতে ছিলেন না। পরে পুলিশ গিয়ে অনুরোধ করলে অবরোধ ওঠে। তবে ওই বিক্ষোভের কথা শুনে তৃণমূলের কর্মীরাই অবাক। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, লোকসভা ভোটের পরেই এই জেলায় রাজনীতির হাওয়া যে কোন দিকে ঘুরছে, তার আরও একটি প্রমাণ মিলল।
ভূমি রক্ষা কমিটির পিছনে বিজেপির মদত রয়েছে বলে দাবিও করেছে তৃণমূল। ওই আন্দোলনে এদিন নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বিজেপির যুব নেতা দীপঙ্কর দেবকে। জমি রক্ষা কমিটি অবশ্য দাবি করে, তাদের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁদের অভিযোগ, শহর সংলগ্ন খাগরাবাড়িতে এক তৃণমূল নেতার সজল সরকারের ভাই সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে ৭০ বিঘা জমি দখল করে রেখেছে। একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, “ক্ষমতায় থাকার সুবাদে তৃণমূল নেতারা ওই জমি দখল করেছে। মন্ত্রীর হাত মাথায় রয়েছে বলেই ওই সাহস পেয়েছে।” তৃণমূলের খাগরাবাড়ি অঞ্চল সভাপতি সজল অবশ্য দাবি করেন, ‘‘জমি রক্ষা কমিটির নামে এক জন অর্থলগ্নি ব্যবসায়ী বিজেপির সঙ্গে গিয়ে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’’ তিনি বলেন, “দলের তরফ থেকে কোথাও জমি দখল করিনি। কিছু জমি কেনার কথা বলে কয়েক জনের সঙ্গে আমার ভাইয়ের লিখিত চুক্তি হয়েছে। সেখানে রাজনীতি আনা হচ্ছে। মন্ত্রীর নাম আনা হচ্ছে। এটা বিজেপির চক্রান্ত।”
এমন চলতে থাকলে বিজেপি নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ দেখানোর হুমকি দিয়েছে তৃণমূল। রবিবাবু বলেন, “বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে এমন অভিযোগ তুলেছে। কে জমি কিনেছে, আর কে বিক্রি করেছে সেটা তাঁদের ব্যাপার। তার জন্যে আইন-আদালত আছে। সেখানে রাজনীতি জড়িয়ে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।”