শেষ দু’দিন বৃষ্টি হয়নি, তা-ও ছন্দে ফেরার চেষ্টা করে হোঁচট খাচ্ছে পাহাড়। নিজস্ব চিত্র
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিপর্যয়ের চিহ্ন। কোথাও জল নেই, কোথাও কোথাও এখনও বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ। ধসের জেরে কোথাও কোথাও বন্ধ হয়ে আছে রাস্তাও। সব মিলিয়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা। শেষ দু’দিন বৃষ্টি হয়নি, তা-ও ছন্দে ফেরার চেষ্টা করে হোঁচট খাচ্ছে পাহাড়। প্রতি দিনই সমস্যায় পড়ছেন পর্যটক থেকে স্থানীয় মানুষেরা।
দু’দিন আগেও গরুবাথান ব্লকের লাভার কাছে শেরপা গাঁও এলাকায় ভেঙে গিয়েছে রাস্তা। ফলে পর্যটকদের লাভায় যেতে সমস্যা হচ্ছে। অন্য দিকে, ঝান্ডি যাওয়ার বিকল্প রাস্তাও ভেঙে গিয়েছে। সেই কারনে ঝান্ডি, সুনতালেখোলা, সামাবিয়ং এলাকায় যাবার বিকল্প রাস্তাও বন্ধ। সুনতালেখোলা এলাকার এক বাসিন্দা জানান, দু’দিন আগের বৃষ্টিতে পাহাড়ের রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যাও দেখা দিয়েছে সুনতালেখোলা, ঝান্ডি, সামাবিয়ং এলাকায়। ৭০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা নেই। সাধারণত পাহাড়ের উঁচু জায়গার ঝর্না থেকে পানীয়জল পাইপের মাধ্যমে এই সব গ্রামে আসে, কিন্তু ধসের কারণে সব পাইপ লাইন নষ্ট হয়েছে। যার ফলে শুরু হয়েছে পানীয় জলের সমস্যা।
ঝান্ডির একটি হোম স্টে-র মালিক শুভম পোদ্দার বলেন, ‘‘জায়গায়-জায়গায় রাস্তা খারাপ। পর্যটকদের ঘুর পথে নিয়ে আসতে হচ্ছে। যে হেতু আগে থেকে বুকিং রয়েছে, তাই পর্যটকেরা আসছেন।’’ করোনার কারণে দীর্ঘ দিন ধরেই পর্যটনস্থলগুলি কার্যত বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল। সংক্রমণ কমায় এগুলি ফের চালু হয়েছে। পুজোর মধ্যে সেখানে ফের আসতে শুরু করেছিলেন পর্যটকেরা। কিন্তু ফের সমস্যা শুরু হওয়ায় পর্যটক আসা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। শুভম বলছেন, ‘‘দু’বছর করোনার জন্য পর্যটন ব্যবস্থা খুব খারাপ ছিল। তবে পুজোর সময় থেকে কিছুটা ভাল হচ্ছিল ব্যবসা। তবে বৃষ্টিতে ফের বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের।’’
ডালিমটারের একটি হোম স্টে-এর মালিক দেওপ্রকাশ রাই বলেন, ‘‘এখানে আসার রাস্তায় আট জায়গায় ধস নেমেছে। যোগাযোগ একদম বিচ্ছিন্ন। হাঁটা পথ ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। দ্রুত রাস্তার সংস্কার না হলে মানুষের সমস্যা বাড়বে।’’ তবে পর্যটকেরা জানাচ্ছেন, এত দুর্যোগের মধ্যেও আতিথেয়তার কোনও খামতি রাখছে না হোম স্টে বা হোটেলগুলি। শুধু রাস্তার পরিস্থিতি, জলের সমস্যার কারণেই ঘুরতে এসে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।