চা-বাগানের শ্রমিক। —ফাইল চিত্র।
পাহাড়ের চা-বাগান শ্রমিকদের জন্য বোনাস সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের দফতর থেকে জারি করা ওই অ্যাডভাইজ়রিতে বলা হয়েছে, দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পঙের চা-বাগানগুলিতে শ্রমিকদের ১৬ শতাংশ হারে বোনাস দিতে হবে। ৪ অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকদের বোনাস দিয়ে দিতে হবে। যদি কোনও চা-বাগানের মালিক পক্ষ আর্থিক ভাবে তেমন লাভবান না থাকে, তারা প্রয়োজনে শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে বোনাসের অঙ্কের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার ওই অ্যাডভাইজ়রিতে জানিয়েছেন, চা শ্রমিকদের বোনাসের বিষয়ে মালিক পক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছে শ্রম দফতর। বৈঠকে চা-বাগানের একাধিক মালিক পক্ষ জানিয়েছে বিভিন্ন কারণে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। সে ক্ষেত্রে বোনাস আইন, ১৯৬৫ অনুযায়ী ৮.৩৩ শতাংশের থেকে অধিক হারে বোনাস দিতে তাঁরা অক্ষম। সেখানে শ্রমিক সংগঠনগুলিও অন্তত ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে অনড়। বোনাসের অঙ্ক ভাগে ভাগে নিতেও রাজি নয় তারা।
একাধিক বার আলোচনার পর মালিক পক্ষগুলি ১৩ শতাংশ হারে বোনাস দিতে রাজি হয়। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলি তার পরেও ২০ শতাংশের দাবি থেকে সরতে রাজি ছিল না। এই অবস্থায় চা-বাগান শ্রমিকদের ১৬ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য।
চা-বাগান শ্রমিকেরা শুরু থেকেই ২০ শতাংশ বোনাসের দাবি তুলে আসছিলেন। এই নিয়ে সোমবার পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্ধও ডেকেছিল চা-শ্রমিকদের আটটি সংগঠনের মিলিত মঞ্চ। যদিও সেই ধর্মঘটের বিশেষ প্রভাব পড়েনি দার্জিলিং ও কালিম্পঙে। বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েক জায়গায় পথ অবরোধের চেষ্টা হয়েছিল। তবে পুলিশ বন্ধ সমর্থনকারীদের হটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিল। সোমবার বন্ধের পরের দিনই এ বার বোনাসের বিষয়ে পদক্ষেপ করল রাজ্য। প্রসঙ্গত, চা-শ্রমিকদের বোনাসের দাবিতে বন্ধ নিয়ে সোমবারই মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমরা কোনও বন্ধ সমর্থন করি না। বাংলায় কোনও বন্ধ হয় না। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চলছে। সেখানে সমাধান বেরিয়ে আসবে।’’