দায়িত্ব বাড়ল দিনহাটার গীতলদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অপসারিত প্রধান আবুয়াল আজাদের। নিজস্ব চিত্র।
বিধায়ক শিবিরের না-পসন্দ হলেও দায়িত্ব বাড়ল দিনহাটার গীতলদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অপসারিত প্রধান আবুয়াল আজাদের। তাঁকে দলের অঞ্চল সভাপতির দায়িত্বে বসালেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ এবং সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। এই ঘটনায় জেলা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল আরও বাড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বুধবার নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করেন উদয়ন এবং গিরীন্দ্রনাথ। তাতে আবুয়ালকে গীতলদহ ১ নম্বর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি করার কথা ঘোষণা করেন তাঁরা। গিরীন্দ্রনাথ বলেন, “দলীয় নির্দেশ অমান্য করে ছ’জন পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে আবুয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে প্রধান পদ থেকে অপসারিত করেছেন গীতলদহ ১ নম্বরের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমান। তাই মাফুজারকে অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় আবুয়ালকে অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হল।”
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনে সিতাই কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূলের জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। গীতালদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত ওই কেন্দ্রের অন্তর্গত। সিতাই থেকে জয়ের পরেই আবুয়ালের বিরুদ্ধে বিধানসভা নির্বাচনে গোপনে বিজেপি-র হয়ে কাজ করার অভিযোগ আনেন তিনি। এর পর সেখানকার ছয় পঞ্চায়েত সদস্য আবুয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন। যদিও জেলার অন্যান্য গ্রাম পঞ্চায়েতের মতো গীতালদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতেও যাতে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ না করা হয়, সে জন্য নির্দেশ জারি করেছিলেন গিরীন্দ্রনাথ এবং উদয়ন। অভিযোগ, দলীয় নির্দেশকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রধানকে অপসারিত করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যায় বিধায়ক শিবির।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে বিধায়ক শিবিরের অন্যতম নেতা তথা কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন জেলা সভাপতি। এতে অনাস্থা প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়া তো দূরের কথা, প্রকাশ্যে জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেন জগদীশ। শেষ পর্যন্ত ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তায় ওই অনাস্থা পাশ করিয়ে আবুয়ালকে প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয় বিধায়ক শিবির। এর পরেই উদয়ন এবং গিরীন্দ্রনাথ সেই আবুয়ালকেই অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব দিলেন। এ ভাবে তাঁরা বিধায়ক শিবিরকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।