বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। নিজস্ব চিত্র
গত বছর ‘ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ (‘নাক’)-এর মূল্যায়নে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের অবনমন ঘটেছে। ‘এ’ থেকে ‘গ্রেড’ নেমেছে ‘বি প্লাস প্লাস’-এ। এ বার তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞ দল ঠিক করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে নিতে চাইছেন। বুধবার পাঁচ সদস্যের দলের তিন জন বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছেন। তিন দিন ধরে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান খতিয়ে দেখবেন। তবে ‘নাক’ মূল্যায়নের ‘রিপোর্ট’ দেওয়ার সময় খামতির জায়গাগুলো উল্লেখ করে গিয়েছিল। তা ছাড়া, উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশে নতুন শিক্ষানীতি চালুর সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই এখনই তড়িঘড়ি এই কমিটিকে দিয়ে মূল্যায়নের যৌক্তিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
বিশেষজ্ঞ দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রাক্তন সচিব আর কে চৌহ্বান। এ দিন এসেছেন আরও দু’জন— পঞ্জাবের চিৎকারা ইউনিভার্সিটির ডিরেক্টর (অ্যাক্রিডিটেশন) কে কে মিশ্র, হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বীরবালা আগরওয়াল। বিশেষজ্ঞ দলে হরিয়ানার এম ডি ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন উপাচার্য পি কে পূনিয়াও ‘ভার্চুয়াল’ পদ্ধতিতে যুক্ত থাকছেন। তিনি আসেননি। আসতে পারেননি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রজত আচার্যও। আর কে চৌহ্বান জানান, বছর ২০ আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য হিসাবে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজের মান কোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে, সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখব। ‘নাক’-এর পরবর্তী পরিদর্শনের আগে কী কী করতে হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দেব।’’
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র জানান, বিশেষজ্ঞ দলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ পর্যালোচনা করবে। তিনি বলেন, ‘‘গত জুন মাসে ‘নাক’ পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিয়েছে। তাদের পরামর্শ আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখব। পরবর্তী মূল্যায়নের আগে সে সব খামতি দূর করার চেষ্টা করব। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেব। সেই জন্য এই বিশেষজ্ঞ দল।’’
বিশেষজ্ঞ দল গঠন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খরচ নিয়েও। শিক্ষক সমিতির সভাপতি সমরকুমার বিশ্বাস, ‘‘প্রথম দিন ওঁরা যা বলেছেন, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের যে তথ্য রয়েছে, ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে তা সাজিয়ে দেখাতে পারলেই ‘এ প্লাস’ পাওয়া যেতে পারত। তাই কেবল বাইরের বিশেষজ্ঞ নন, যাঁরা এখানকার শিক্ষক, নিয়মিত ‘নাক’-এর সঙ্গে কাজ করেন, তাঁদেরও রাখা উচিত ছিল। তাতে আর্থিক সাশ্রয় হত।’’ শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডলের বক্তব্য, এখানকার বিশেষজ্ঞদের আগে কাজে লাগালে এই মান হত না এবং নতুন শিক্ষা নীতি চালু হলে কী হবে, সেটাও ভাবতে হবে।