সিপিএম-এর ২৬তম রাজ্য সম্মেলনের লোগো প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র ও সুজন চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটে রাজ্যে জোট গড়ে লডাই করে দু’পক্ষেরই ভরাডুবি হয়েছিল। কলকাতার পুরভোট এবং তার পরে আরও চারটি পুর-নিগমের নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা হয়নি। কিন্তু কংগ্রেস-সহ গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মোকাবিলার রাস্তা যে তাঁরা বন্ধ করতে চান না দলের আসন্ন রাজ্য সম্মেলনের আগে সেই ইঙ্গিতই স্পষ্ট করে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচনী কৌশল ভোটের সময়ে পরিস্থিতি বিচার করে ঠিক হয়। কিন্তু এ রাজ্যে সিপিএমের রাজনৈতিক কৌশলে এখনও কোনও পরিবর্তনের ভাবনা নেই।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন এক মাস পিছিয়ে গিয়েছে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে শুক্রবার সূর্যবাবু আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছেন, কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে দলের ২৬তম রাজ্য সম্মেলন হবে আগামী ১৫ থেকে ১৭ মার্চ। সম্মেলন-স্থল ও মঞ্চের নামকরণ হবে সিপিএমের দুই প্রয়াত নেতা নিরুপম সেন ও শ্যামল চক্রবর্তীর নামে। রাজ্য সম্মেলনের লোগোও এ দিন প্রকাশ করেছেন সূর্যবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের পলিটবুরো সদস্য বিমান বসু এবং কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য ও সুজন চক্রবর্তী।
বিধানসভা ভোটের পরে পুরভোটে যে ছবি দেখা গিয়েছে, তাতে কি কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার কৌশল নিয়ে সম্মেলনে নতুন চিন্তা-ভাবনা করা হবে? সূর্যবাবু বলেন, ‘‘পার্টি কংগ্রেসে যা হবে, সেটা সর্বভারতীয় বিষয়। আমাদের এক্তিয়ারের নয়। এখানে বিধানসভা ভোটের সময়ে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমরা বাম, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে সংহত করার যে কথা বলেছিলাম, তা নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। এই লক্ষ্যের কোনও পরিবর্তন হয়নি। পুরভোটেও একই কথা বলছি।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের আরও ব্যাখ্যা, ‘‘শুধু কংগ্রেস বলে নয়, দু’টো নির্বাচনের অন্তর্বর্তী সময়ে লড়াইয়ের ময়দানে কারা সঙ্গে রয়েছে, তা দেখেই নির্বাচনী কৌশল ঠিক হয়। সেটা যথাসময়ে হবে। সম্মেলনে রাজনৈতিক কৌশল ঠিক হয়।’’ পুরভোটে জোটের সিদ্ধান্ত জেলাওয়াড়ি পরিস্থতিতির উপরে ছেড়ে দিলেও বিজেপি ও তৃণমূল-বিরোধী আন্দোলনের ময়দানে কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে তাঁরা যে সঙ্গে নিয়েই চলতে চান, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন সূর্যবাবু। আসন্ন পার্টি কংগ্রেসের আগে সিপিএমের সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেও দলের রাজনৈতিক লাইন অপরিবর্তিত রাখার কথাই বলা হয়েছে।