প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
ঝালদা পুরসভায় প্রশাসক বসানোর তৎপরতা ঘিরে ফের আর এক প্রস্ত সংঘাত বাধল সরকার ও বিরোধী পক্ষের। নতুন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে বুধবার চিঠি দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অভিযোগ জানালেন, ঝালদা পুরসভায় তৃণমূলের হাতে ক্ষমতা ধরে রাখতে রাজ্য প্রশাসন ক্ষমতার অপব্যবহার করছে, প্রশাসক বসাতে চাইছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেছেন, নতুন বোর্ড তৈরি হওয়ার আগে প্রশাসক বসানোই নিয়ম।
চিঠিতে অধীরবাবুর দাবি, ‘ঝালদার পুরপ্রধান সোমবার তলবি-সভায় অপসারিত হওয়ায় কংগ্রেস ও নির্দল কাউন্সিলরদের বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু খবর পাওয়া যাচ্ছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিদায় জানিয়ে ঝালদায় রাজ্য সরকার প্রশাসক নিয়োগ করতে চলেছে’। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপাল যাতে ব্যবস্থা নেন, সেই আর্জি জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ যদিও পাল্টা বলেছেন, ‘‘অধীর চৌধুরী ভুল বুঝে ভুল বকছেন! নিয়ম মেনেই অনাস্থার পরে নতুন বোর্ড গঠন পর্যন্ত ঝালদা পুরসভার কাজকর্ম চালাতে প্রশাসক নিয়োগ করতে হবে সরকারকে। তা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই।’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঝালদায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কাউন্সিলরদের উদ্দেশে এ দিন পরামর্শ দিয়েছেন, প্রয়োজনে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার নিজেদের স্বার্থে কোনও পদক্ষেপ করতেই পিছপা হবে না।
ঝালদার চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে ১৩ অক্টোবর অনাস্থা এনেছিলেন কংগ্রেসের পাঁচ কাউন্সিলর ও এক নির্দল কাউন্সিলর। পরে এক কাউন্সিলর তৃণমূল ছেড়ে বিক্ষুদ্ধ শিবিরে যোগ দেন। এর ফলে তৃণমূলের কাউন্সিলরের সংখ্যা পাঁচ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধেরা সোমবার তলবি-সভায় নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেন। বোর্ড গঠনের সম্মতি চেয়ে বিক্ষুব্ধদের তরফে প্রস্তাবের প্রতিলিপি এসডিও (ঝালদা), জেলা প্রশাসন, রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়। কিন্তু তা নিয়ে এ দিন পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ইতিপূর্বে দলত্যাগী ওই কাউন্সিলরের সদস্যপদ খারিজের জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছিল তৃণমূল। এসডিও ওই কাউন্সিলরের অবস্থান জানতে চেয়ে চিঠি পাঠান। সেই কাউন্সিলর তা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। হাই কোর্ট এ দিন ওই কাউন্সিলরকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশাসনকে জবাব দিতে বলেছে।