(বাঁ দিক থেকে) ধৃত আজিজুর রহমান হাতুড়ে চিকিৎসক ও কাশ্মীরা বিবি। —ফাইল চিত্র
নিউ আলিপুরের সারোগেসি-প্রতারণা মামলার জট খুলতে পুলিশ পৌঁছেছিল ডায়মন্ড হারবারের একটি ভুয়ো হাসপাতালে। তার পরে চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই চলা নিম্নমানের ওই হাসপাতালে উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ এক ব্যক্তির চিকিৎসকের কাজ করার ঘটনা সামনে আসে। সে গ্রেফতারও হয়। ওই হাসপাতাল চলত তার বাড়িতেই। তার পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। তার পরেই এই ধরনের হাসপাতাল রোধে খুব দ্রুত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে তল্লাশি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই ভাবে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে কলকাতার হাসপাতালগুলিতেও।
রবিবার ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘জেলার সব ছোট-বড় হাসপাতালে তল্লাশি-অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। দোল উৎসব কাটলেই তা শুরু হবে।’’ যদিও এমন গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে দোল উৎসব কাটার অপেক্ষা করা হবে কেন? কী করেই বা এত দিন ধরে জেলায় এই ধরনের ভুয়ো হাসপাতাল চলল?— সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। দেবাশিসবাবু শুধু বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অভিযোগের জন্যই বা কেন অপেক্ষা করা হবে, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর অবশ্য মেলেনি তাঁর কাছে।
সম্প্রতি গর্ভদাত্রী মা (সারোগেট মাদার) হওয়ার কথা দিয়ে এক দম্পতির সঙ্গে আট লক্ষ টাকার চুক্তি করেছিল কাশ্মীরা মোল্লা নামে এক মহিলা। তিন লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা নেওয়ার পরে ২৬ সপ্তাহের মাথায় বেপাত্তা হয়ে যায় সে। অভিযোগ, ডায়মন্ড হারবারের মন্দিরবাজার এলাকায় গোপাল মালিক নামে এক ভুয়ো চিকিৎসকের কাছে গিয়ে মাত্র চার হাজার টাকায় ভ্রূণ হত্যা করায় সে। পুলিশ কাশ্মীরা, ওই ভুয়ো চিকিৎসক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
সন্তানের জন্ম দিলে চুক্তি অনুযায়ী আট লক্ষ টাকা পেত কাশ্মীরা। কিন্তু তিন লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা নিয়েই কেন সে সন্তান নষ্ট করে ফেলল এখনও সেই প্রশ্ন ঘুরছে। তবে তদন্তে কোনও চক্রের কথা উঠে আসেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাদের দাবি, সাত বছর আগেই কাশ্মীরার স্বামী মারা যায়। ফলে সমাজের চাপেই সে শেষ পর্যন্ত গর্ভদাত্রী মা হয়ে সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি।