সোমবার হস্টেলের ঘরে আত্মঘাতী হন ডাক্তারি পড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র।
পড়াশোনায় আগাগোড়া ভাল। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলে সেই মেয়ের আত্মহত্যার খবরে চমকে গিয়েছেন সোদপুর অম্বিকাপুর রামকৃষ্ণ পুরের বাসিন্দারা। প্রতিবেশীদের প্রশ্ন, কী এমন ঘটল যে নিজেকে শেষ করার মতো সিদ্ধান্ত নিলেন প্রদীপ্তা? মঙ্গলবার মেয়ের নিথর দেহ দেখে বাক্রুদ্ধ মা কবিতা দাস। বাবা প্রশান্ত দাস কান্নাচাপা গলায় জানালেন, মেয়ে জানিয়েছিল আর চাপ নিতে পারছে না।
সোমবার রাতে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ঘর থেকে এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরে জানা যায়, আত্মঘাতী ছাত্রী এমবিবিএসের পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী। নাম প্রদীপ্তা দাস। ২২ বছরের ঝকঝকে এই তরুণীর মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী বাবা প্রশান্তকুমার দাস মেয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে ছুটে যান ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে। তিনি জানান, চার দিন আগে মেয়ে তাঁকে জানায় পড়াশোনার অত্যধিক চাপ। আর পারছে না সে। মেয়েকে তিনি সাহস জুগিয়েছিলেন। তিনি মেয়ের এই সমস্যা হেলাফেলা করেননি। গত রবিবারই তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর সোমবার সকালেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় প্রদীপ্তা। পৌঁছে বাড়িতে ফোনও করে। আর বিকেলেই আসে মৃত্যুসংবাদ!
ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ওল্ড গার্লস লেডিস হস্টেলের তৃতীয় তলের ১০ নম্বর ঘরে থাকতেন প্রদীপ্তা। তাঁর ঘরে থাকতেন আরও দুই সহপাঠী। তাঁরা জানাচ্ছেন, সোমবার দুপুরে ক্লাস করে হস্টেলের ঘরে ফিরে আসেন প্রদীপ্তা। তার পরেই ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। সেই সময় তাঁরা খেতে গিয়েছিলেন বলে জানান সহপাঠীরা। হস্টেলের ঘরে ফিরে দরজা বন্ধ দেখে ধাক্কাধাক্কি করেও ভিতর থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। খবর যায় হস্টেল কর্তৃপক্ষের কাছে। এর পর দরজা ভেঙে দেখা যায় ওড়নায় ফাঁস নিয়ে ঝুলছেন প্রদীপ্তা।
প্রদীপ্তার প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ছোট থেকে প্রদীপ্তাকে তাঁরা চেনেন মেধাবী বলে। সেই মেয়ের এমন মৃত্যুতে হতবাক তাঁরাও।