শুনানি শুরু সুপ্রিম কোর্টে। —ফাইল চিত্র।
বেঞ্চ বলে, ‘‘আমাদের নির্দেশ শুনুন। এই শুনানির উপর ভিত্তি করে আমরা কিছু রায় দিতে চাই না। সিবিআইয়ের আইনজীবী স্বীকার করেছেন, হাই কোর্টের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ মামলাটি শুনছেন। তাই তাঁর কাছে অনুরোধ, হাই কোর্টের কাছেই তাঁরা সমস্ত বিষয়টি উত্থাপন করুন।’’ বেঞ্চ আরও বলে, ‘‘হাই কোর্টের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ কী রায় দেয় সে দিকে আমরা নজর রাখব।’’ এর সঙ্গেই সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলে, ‘‘সিবিআই যে আবেদন দাখিল করেছে তা প্রত্যাহার করা হোক।’’
বেঞ্চ বলে, ‘‘এখানে দু’টি বিষয় রয়েছে। প্রথমটি যাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয়টি যাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়নি। এর ভিত্তিতেই জামিন মঞ্জুর করেছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত।’’ মেহতা বলেন, ‘‘জামিন পাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আমরা এড়িয়ে যাচ্ছি।’’
মেহতা বলেন, ‘‘সরকারি আইনজীবী বলছেন, ভিড়ের চাপে তিনি মোবাইলের মাধ্যমে সওয়াল জবাব করছেন।’’ বিচারপতিদের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমরা যখন আইনজীবী ছিলাম, আমরা কি চার্জশিট জমা দেওয়ার পর সওয়াল জবাব করতাম?’’
সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘‘হাই কোর্টের বিচারপতিরাও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এই জায়গাটা লক্ষ্য করুন, ‘ওই ব্যক্তিরা কী প্রভাব ফেলেছিল’। প্রত্যেকে তা জানেন। ওই ঘটনার সরাসরি সম্প্রচার হয়েছিল। সিবিআই কী করতে পারে? তাদের প্রভাব এবং ঔদ্ধত্য দেখুন।’’
বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘আপনার সিবিআই এই মামলায় কী সমাধান করেছে?’’ মেহতা বলেন, ‘‘সিবিআই আমার নয়, দেশের।’’ অভিযুক্তদের আইনজীবী লুথরা তখন বলেন, ‘‘এটা সত্যি, সিবিআই তাদের।’’ তখন বেঞ্চ বলে, ‘‘এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ মেহতা পাল্টা বলেন, ‘‘আমি নাম এড়িয়ে যেতে চাইছি। আমার ব্যঙ্গাত্মক হওয়া উচিত ছিল।’’
মেহতা বলেন, ‘‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন না করেই জামিন দেওয়া হয়েছে। আপনারা কি এই দিক খতিয়ে দেখবেন না? আমরা এর পিছনের কারণগুলি আর উল্লেখ করতে চাইছি না। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’
আদালতে মেহতা বিচারপতিদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা মামলাটি স্থানান্তর করতে পারেন।’’ তখন বিচারপতিদের বেঞ্চ পাল্টা বলেন, ‘‘তা হলে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণকে অগ্রাহ্য করা হবে।’’ এর পর মেহতা বলেন, ‘‘হাই কোর্টকে অবিশ্বাস করুন, এটা আমি বলতে চাইছি না। আমার বক্তব্য, মামলাটি রাজ্যের বাইরে স্থানান্তরিত করা হোক। রাজ্যের পরিস্থিতির উপর ভরসা রাখা উচিত হবে না।’’
সুপ্রিম কোর্টে শুরু হল নারদ মামলার শুনানি। মঙ্গলবার বিচারপতি বিনীত শরণ এবং বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের অবকাশকালীন বেঞ্চে শুরু হয়েছে শুনানি।
সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। বুধবার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই সিবিআইয়ের আবেদনের ভিত্তিতে শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানি হচ্ছে। অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, সিদ্ধার্থ লুথরা। সিবিআইয়ের আইনজীবী কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।