Domkal Hospital

উনজিলার স্বামীর নাম ‘হাসপাতাল’

মহিলা রাগে গরগর করছেন, ‘‘হাসপাতালে গেলে ওষুধ নাই, ডাক্তারের দেখা পাওয়া দায়, আর আমার স্বামীর নাম কিনা ডোমকল হাসপাতাল!’’

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৫
Share:

ভোটার তালিকায় ভুল দেখাচ্ছেন উনজিলা বিবি। নিজস্ব চিত্র

মহিলা রাগে গরগর করছেন, ‘‘হাসপাতালে গেলে ওষুধ নাই, ডাক্তারের দেখা পাওয়া দায়, আর আমার স্বামীর নাম কিনা ডোমকল হাসপাতাল!’’ ডোমকল পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রমনা শেখপাড়ার উনজিলা বিবির বড্ড রাগ। তিনি একা নন, ভোটার কার্ডে কারও নামের বানান এমন উদ্ভট যে উচ্চারণ করা যাচ্ছে না, কারও বা সন্তানের বয়স বাবার চেয়ে বেশি। এমন দায়সারা কাজের জন্য গোটা পাড়া গজগজ করছে ক্ষোভে।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘অত্যন্ত নিম্নমানের অপারেটর দিয়ে ভোটার লিস্ট তৈরি করালে যা হয় তাই হয়েছে। এত মানুষের হয়রানির দায় এখন কে নেবে!’’ ডোমকলের মহকুমাশাসক সন্দীপ ঘোষ বলছেন, ‘‘ভুলে ভরে আছে তালিকা। আমরা বলছি ফর্ম ৮ পূরণ করে জমা করুন। সমাধান তো করতেই হবে।’’

উনজিলার দাবি, এতদিন ভুল ছিল এলাকার নাম, রমনা সরকার পাড়ার বদলে এলাকার নাম হয়েছিল গরীবপুর। এ বার নতুন করে ভোটার তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে নাম বিভ্রাটে পরিচয়টাই গোলমাল হয়ে যাচ্ছে! উনজিলার স্বামী মতিউর শেখ রাতারাতি তাই হয়ে গিয়েছেন ডোমকল হাসপাতাল! জলঙ্গির ভাদুরিয়া পাড়া এলাকার মমতাজ বিবিও নতুন ভোটার তালিকায় নিজের এবং মায়ের নাম দেখে আঁতকে উঠেছেন। সংশোধিত নতুন কার্ড আসার পরে দেখা যাচ্ছে তাঁর নাম বদলে হয়ে গিয়েছে, বীরেন্দ্রনাথ মণ্ডল খাতুন, আর মায়ের নাম মেঘনাদ মণ্ডল বিবি। তিনি বলেন, ‘‘ভোটার তালিকায় নামের বানান ভুল নিয়ে অনেক গল্প শুনেছি এত দিন, কিন্তু এ বার আমাদের নাম নিয়ে যা হল সেটা ভাবতেই পারছি না। কাছাকাছি কিছু একটা হলেও বুঝতাম কিন্তু এক বারও মনে হল না এমন নাম হয় কখনও!’’

Advertisement

নাম বিভ্রাটের কাহিনির তালিকায় রয়েছেন ডোমকল রসুলপুরের মজুমদার পরিবার। পরিবারের কর্তা নিখিল মজুমদার ভোটার তালিকায় নিজের বয়স দেখে রীতিমতো ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। তাঁর বয়স লেখা ৩২, আর কন্যা তনুশ্রী মজুমদারের বয়স পাক্কা ৬২!

নিখিলবাবু বলেন, ‘‘কী মুশকিল বলুন দেখি, ৬২ বছর বয়সে এসে সরকারের খাতায় যুবক হয়ে গেলাম। আর মেয়ে কিনা আমার চেয়ে তিরিশ বছরের বড়?’’ চমকে গিয়েছেন সাগরপাড়ার সচিন মণ্ডলও। রাতারাতি তিনি তারকা হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর পদবি মণ্ডলকে উচ্ছেদ করে একেবারে তেন্ডুলকর আর স্ত্রী সাধনা মণ্ডলের জায়গায় সাধনা তেন্ডুলকর। আবেদন করেছেন পদবি বদলের, কিন্তু পাড়ার লোক তাঁকে দেখলে বলে চলেছেন, ‘‘এত তাড়াতাড়ি খেলা ছেড়ে দিলেন সচিনবাবু!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement